বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা ৫০ মিনিট। বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩০৪৩ ফ্লাইট ছাড়ার সময়। কিন্তু ৩টা ২৩ মিনিটে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষ করেননি চার হজযাত্রী। মাইকে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছিল। বারবার ইমিগ্রেশন শাখা থেকে সতর্ক বার্তার আওয়াজ ভেসে আসছিল মাইকে। শোনা যায়, ‘এখনও যারা ৩ টা ৫৫ মিনিটের বিজি ৩০৪৩ ফ্লাইটের ইমিগ্রেশন শেষ করেননি তারা দ্রুত শেষ করুন। কিন্তু হজযাত্রীদের মধ্যে কোনো চাঞ্চল্য দেখা যায়নি। কারণ ওই চার যাত্রী তখন ক্যাম্পেই ছিলেন না।
Advertisement
বিকেলে হযরত শাহজালার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন হজক্যাম্পে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। জানা যায়, বেলা ১১টা থেকে শুরু হয় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম। বাকিদের ইমিগ্রেশন নির্ধারিত সময়েই শেষ হয়।
ইমিগ্রেশন শাখায় গিয়ে দেখা যায়, বিমানের কর্মীরা ছোটাছুটি করছেন। চারজন হজযাত্রীর খোঁজে তারা। বেলা ৩টা ২০ মিনিটে জোবায়ের নামে ইমিগ্রেশন লাইনের কর্মী জাগো নিউজকে বলেন, চারজন হজযাত্রী এখন পর্যন্ত ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করেননি। অথচ ৩টা ৫৫ মিনিটে ফ্লাইট। কথা বলতে বলেতেই ট্রলি নিয়ে ইমিগ্রেশনে হাজির হন সিরাজগঞ্জ বেলকুচি এলাকার শহীদুল ইসলাম খান ও মান্নান মণ্ডল। চারযাত্রীর মধ্যে দুজনকে পাওয়া গেল। কিন্তু এখনো দুইজন যাত্রীর হদিস নেই।
তবে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা এই দুই যাত্রীর কথায় আশ্বস্ত হলেন ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা। তারা জানালেন বাকি দুজন যাত্রী পথে আছেন। তাদের লাগেজ আমাদের কাছে। এভাবে কথা শেষ করতে করতেই বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে হাজির হন বাকি দুই যাত্রী।
Advertisement
এ বিষয়ে হজক্যাম্পে ইমিগ্রেশন শাখার কর্মকর্তারা জানান, বিজি-৩০৪৩ ফ্লাইটের চারজন যাত্রী ব্যতীত সকলের ইমিগ্রেশন নির্ধারিত সময়েই শেষ হয়। কিন্তু চারজন একেবারে অন্তি সময়ে এসে ইমিগ্রেশন শেষ করেন।
বিমান বাংলাদশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটের হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার ব্যবস্থা রয়েছে হজক্যাম্পে। বাকি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয় বিমানবন্দরেই। এরপরও হজযাত্রীদের কারণে মাঝে মাঝে হজ ফ্লাইটের কার্যক্রমে ধীরগতি নেমে আসছে।
হজক্যাম্পের পরিচালক সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এবার এখন পর্যন্ত বিশেষ কোনো সমস্যা হয়নি। তবে এখানে বাংলাদেশ বিমানের হজযাত্রীরা মাঝেমধ্যে সময়ক্ষেপণ করছেন। অনেক করে তাগাদা দিয়েও সময়মতো ইমিগ্রেশন শেষ করা যাচ্ছে না। সময়মতো হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষ করার অনুরোধ জানান তিনি।
এদিকে ক্যাম্পে মসজিদের বারান্দায় চোখে পড়ে রাতের ও সকালের হজযাত্রীদের ব্যস্ততা। মোয়াল্লেম ও আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতায় ট্রলিব্যাগ রশি দিয়ে বাঁধছিলেন যাত্রীরা।
Advertisement
মোয়াজ্জেম হোসেন নামে এক হজযাত্রী বলছিলেন, বিমানে ওঠা ও নামার সময় কুলিরা ওপর থেকে ট্রলি ব্যাগ ছুড়ে ফেলে দেন। এ কারণে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কখনো কখনো ব্যাগ ছিড়ে যায়, ট্রলি ব্যাগের চাকা ও চেইন খুলে যায়। যে কারণে রশি দিয়ে বেঁধে নিতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে। চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ছয় হাজার ৭৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজারসহ মোট এক লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ জন বাংলাদেশি হজ পালন করবেন। এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৩১৯ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। বুধবার রাত ১১টা পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান এয়ালাইন্সের ৭২টি ফ্লাইটে ২৭ হাজার ৫২৫ জন ও সৌদি এয়ারলাইন্সের ৭৫টি ফ্লাইটে ২৫ হাজার ৭৯৪ জন হজযাত্রী সৌদি পৌঁছান।
জেইউ/আরএম/জেডএ/জেআইএম