দেশজুড়ে

পিতৃহীন আমিনার স্বপ্ন পূরণ হবে কি?

‘কী করে স্বপ্ন বাস্তব হবে জানি না তবে আমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চাই। মায়ের অভাব দূর করতে চাই।’ কথাগুলো বলছিল চরম দারিদ্র্যাতার মাঝেও এবারের এইসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া পিতৃহীন আমিনা আক্তার।

Advertisement

আমিনা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌরসভার শ্রীনাথপুর গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর মেয়ে।

২০০৪ সালে ঠেলাচালক আব্বাস আলী বন্যার পানির তোড়ে মৃত্যুবরণ। এর এক বছর পর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল আমিনা আক্তার। সে সময় বড় ভাই চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র বশির মিয়া লেখাপড়া বাদ দিয়ে মায়ের সঙ্গে পরিবারের হাল ধরে। মা অন্যের ঘরে ঝিয়ের কাজ করে। অদম্য মনোবল নিয়ে কমলগঞ্জ কলেজ থেকে ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ পেয়েছে আমিনা আক্তার। সে গভীর রাত পর্যন্ত ভাঙা ঘরে কুপির আলোয় লেখাপড়া করতো। প্রাইভেট না পড়ে ও কোচিং না করেই সে এই ফলাফল অর্জন করেছে। ভবিষ্যতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়ার স্বপ্ন আমিনার। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন কি পূরণ হবে?

দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে আমিনা সবার ছোট। বাবার মৃত্যুর পর শুধুমাত্র অর্থের অভাবে বড় ভাই ও বোনের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মা ও বড় ভাই পরিবারের হাল ধরেন। মা হাসনা বিবি অন্যের ঘরে ঝিয়ের কাজ ও বড় ভাই বশির মিয়া কুটির শিল্পের একটি দোকানে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। শুধুমাত্র বাড়িতে সামান্য ভাঙা বসতভিটে ছাড়া আর কোনো জমিজমা নেই।

Advertisement

আমিনা আক্তার বলে, বাবার করুণ মৃত্যুর পর মা ও একমাত্র বড় ভাইয়ের প্রচেষ্টায় আমি এতদূর এগিয়েছি। গভীর রাতে কুপি জ্বালিয়ে লেখাপড়া করেছি। ভালো ফল করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য ছিল। অনেক বাধার পরও ভালো ফল করতে পেরে আমি খুবই খুশি। ভবিষ্যতে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে অর্থের প্রয়োজন। তাই সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

কমলগঞ্জ পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কমিশনার আনছার শোকরানা মান্না জাগো নিউজকে জানান, খুব দরিদ্র পরিবারের মেয়ে আমিনা। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে সে তার স্বপ্ন বাস্তব করতে পারবে।

রিপন দে/আরএআর/জেআইএম

Advertisement