টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স ছিল হতশ্রী। দুই ম্যাচে চার ইনিংসে ব্যাটিং দেখে একবারও মনে হয়নি গত আড়াই-তিন বছরে এই দলটাই হুঙ্কার দিয়েছে বারবার। একের পর এক হয়েছে বিব্রতকর রেকর্ড। সেই দলটাই ফরম্যাট বদলে ওয়ানডেতে আসতেই যেন পাল্টে গেল পরিস্থিতি।
Advertisement
ঘরের মাঠে শক্তিশালী দল হিসেবে পরিচিত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে হেসে খেলে। কঠিন উইকেটে মোটামুটি বিশাল সংগ্রহ গড়ে স্বাগতিকদের আটকে রেখেছে অল্পতেই। অথচ টেস্ট সিরিজ থেকে ওয়ানডে সিরিজের ফারাকটা মাত্র সপ্তাহখানেকের। এই ৮-৯ দিনেই ভোজবাজির মতো বদলে গেল বাংলাদেশের চেহারা।
কিভাবে সম্ভব হলো এই বদলে যাওয়া? টেস্ট সিরিজে নাকানিচুবানি খাওয়া বাংলাদেশ কিভাবেই বা আটকে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে? দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার মতে তেমন বিশেষ কিছুই করেনি তার দল। স্রেফ দেশের জন্য হৃদয় উজার করে খেলার কারণেই পাওয়া গিয়েছে দুর্দান্ত এই জয়। ম্যাচের আগে তিনি সতীর্থদের এই কথাগুলোই বলে জানান।
ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মাশরাফি বলেন, ‘আমি ওদের তেমন বিশেষ কিছু বলিনি। শুধু বলেছি যে দেশের জন্য নিজের হৃদয় উজাড় করে খেল। টেস্ট সিরিজের ব্যর্থতা নিয়ে পড়ে থাকার তো সময় নেই। এটা নতুন সিরিজ। এই সিরিজের শুরুটা ভালো করতে পারলে বাকি ম্যাচেও সব ঠিক থাকবে। ম্যাচেও ঠিক তাই হলো। আশা করি এই খেলা আমরা পরের ম্যাচগুলোয় ধরে রাখতে পারব।’
Advertisement
গায়ানার এই মাঠে সবশেষ ২০০৭ সালে খেলেছিল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিশ্বকাপের সেই ম্যাচেও অবিস্মরণীয় এক জয়ের সাক্ষী ছিলেন মাশরাফি, মুশফিক, সাকিব ও তামিম। সেই স্মৃতি এখনো মনে আছে মাশরাফির। তবে এই ম্যাচে সাকিব-তামিমের রেকর্ডগড়া জুটিই ম্যাচের গতি ঠিকপথ করে দিয়েছে বলে অভিমত বাংলাদেশ অধিনায়কের।
‘সেবার (২০০৭ সালে) বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর কথা এখনো মনে আছে। তবে এবার প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখানে (গায়ানা) যেমন উইকেট, তা অনেকটা আমাদের মতোই। তবে ব্যাটিং করাটা শুরুতে খুব সহজ ছিল না। সাকিব ও তামিম দুর্দান্ত ব্যাট করেই মূলত ম্যাচের গতিবিধি ঠিক করে দিয়েছে। আর শেষে মুশির ক্যামিও ছিল অসাধারণ।’
২৮০ রান ডিফেন্ড করতে নেমে শুরুর ওভারেই বল হাতে তুলে নিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। অন্যপ্রান্তে এনেছিলেন অফস্পিনার মেহেদি মিরাজকে। উইন্ডিজের দুই বাঁহাতি ওপেনার ক্রিস গেইল ও এভিন লুইসকে শুরুতেই ফেরানোর পরিকল্পনা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
মাশরাফি বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছিলাম যে শুরুতে যদি ভালো বোলিং করতে পারি তাহলে এই উইকেটে ২৮০ রান অনেক বেশি। আমাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল গেইল-লুইসকে যত আগে আউট করা যায়। সেটা করতে পেরেছি। এরপর চাপটা ধরে রাখতেও সক্ষম হয়েছি।’
Advertisement
এসময় নিজের বোলিং নিয়েও কথা বলতে হয় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ককে। তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে বোলিং করিনি। এমনকি অনুশীলনও করা সম্ভব হয়নি। হাটু এখন ঠিক আছে। কাজগুলো সবসময়ই কঠিন। তবে আমি মাঠের সময়টা পুরোপুরি উপভোগ করি।’
এসএএস/পিআর