হলি আর্টিসানে হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে গ্রেফতার এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও মামলার অভিযোগ থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
Advertisement
সোমবার (২৩ জুলাই) হলি আর্টিসানে হামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। এতে নিহত ও জীবিত ২১ অভিযুক্তের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, আর্টসানে হামলার ঘটনায় করা মামলার এজাহারে আসামির কলামে কারও নাম ছিল না। এজাহারের বডিতে হাসনাত করিমের নাম ছিল। আর্টিসান থেকে যাদের জীবিত উদ্ধার করেছি এমন ১৭ জন এবং যেই ছয় আসামিকে জীবিত উদ্ধার করে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের জবানবন্দি ও আলামত যাচাই করে যাদের সম্পৃক্ততার নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে চার্জশিটে তাদের নাম দেয়া হয়েছে।
হামলা সম্পর্কে হাসনাত করিমের বক্তব্য কি? জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, নব্য জেএমবির একটি সাংগঠনিক পরিকল্পনা নিয়ে এ হামলা করা হয়েছে। তাদের এ পরিকল্পনার কোথাও হাসনাত করিমের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া যারা জীবিত গ্রেফতার হয়েছে তাদের কথায়ও হাসনাত করিমের নাম আসেনি। সুতরাং হাসনাত করিমের দেয়া ব্যাখ্যার চাইতেও অন্যান্য যারা প্রত্যক্ষদর্শী ছিল তাদের জবানবন্দির ওপর ডিপেন্ট করেছি এবং চার্জশিটে আদালতকে ব্যাখ্যা করেছি।
Advertisement
হামলার পর সেদিনের প্রকাশিত একটি ছবিতে জঙ্গিদের হাসনাত করিমের আচরণ স্বাভাবিক মনে হয়েছিল। এ ছবি বিশ্লেষণ করে কি পাওয়া গেল? এ প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, সেই ছবিগুলো আমরা বিশ্লেষণ করেছি। সেই বিশ্লেষণের ফলাফলও আদালতে ব্যাখ্যা করেছি।
দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, চার্জশিটে রেস্টুরেন্টের ভেতর জঙ্গিদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলাসহ তার সন্দেহজনক ভঙ্গিকে ‘পরিস্থিতির শিকার’ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
গুলশান হামলার দিন জীবিত উদ্ধারের পর থেকেই গোয়েন্দা হেফাজতে রাখা হয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ শিক্ষককে। গুলশান হামলার দুদিন পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে হাসনাত করিমের সঙ্গে জঙ্গিদের নিশ্চিন্তে কথা বলার ছবি প্রকাশ হলে তার সংশ্লিষ্টতার গুঞ্জন ওঠে। গুলশান হামলার এক মাস পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। কয়েকবার জামিন আবেদন করলেও দুই বছর ধরে তিনি কারাগারে আছেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই আর্টিসানে জঙ্গিদের হামলায় ১৭ বিদেশি ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২২ জন মারা যান। জীবিত জিম্মিদের উদ্ধারে ২ জুলাই ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এতে হামলাকারী ছয় জঙ্গিও নিহত হন। অভিযানে এক জাপানি ও দুই শ্রীলঙ্কানসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ৪ জুলাই গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। মামলার তদন্তভার দেয়া হয় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে।
Advertisement
এআর/এএইচ/পিআর