আন্তর্জাতিক

সপ্তাহে তিনদিন ছুটি

সপ্তাহে পাঁচদিন নয় বরং কাজ করতে হবে মাত্র চারদিন। সপ্তাহের বাকি তিন দিন ছুটি। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেখানে দু’দিনই ছুটি দিতে চায় না সেখানে নিউজিল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠান সপ্তাহে তিনদিন ছুটি দিচ্ছে। এতে ওই সংস্থারও লাভ হচ্ছে আর কর্মীরাও এতে খুশি।

Advertisement

কাজের দিনের সংখ্যা কমে যাওয়া মানে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হওয়া। এমন ধারণা কমবেশি সব জায়গায় প্রচলিত। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের একটি বেসরকারি সংস্থা পরীক্ষামূলকভাবে কর্মীদের কাজের দিন কমিয়ে দেখেছে যে, কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে, কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনে ভারসাম্য বজায় থাকছে ও কাজজনিত মানসিক চাপও অনেকটাই কমে গেছে। এর ফলে অফিসের কাজ ছাড়া অন্য প্রয়োজনে ইন্টারনেটের ব্যবহার বন্ধ করেছেন বা কমিয়েছেন বহু কর্মী। এক কর্মী জানিয়েছেন, কাজের প্রতি তিনি এতটাই মনোযোগী ছিলেন যে, তিনি তার স্ত্রীর মেইলও দেখেননি।

ওই সংস্থাটির নাম পারপিচুয়াল গার্ডিয়ান। উইল, জমিজমা, ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি দেখাশোনা করা সংস্থাটির কাজ। সেখানে ২৪০ জন কর্মী কাজ করেন। মার্চ ও এপ্রিল এই দু’মাস সংস্থাটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রত্যেক কর্মীর কাজের দিনের সংখ্যা সপ্তাহে পাঁচ থেকে কমিয়ে চার করেছিল। তবে কর্মীদের বেতন কমানো হয়নি। প্রতিদিনের কাজের সময়ও আটঘণ্টা রাখা হয়েছিল। দু’মাসের ওই পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ কর্মীদের উপর কী রকম ও কতটা প্রভাব ফেলেছে, তা বাইরের একদল গবেষককে দিয়ে পর্যালোচনা করায় সংস্থাটি।

ওই গবেষকদের একজন ইউনিভার্সিটি অব অকল্যান্ড বিজনেস স্কুলের সিনিয়র লেকচারার হেলেন ডেলেনি জানান, কাজের একটা দিন কমায় কাজের প্রতি কর্মীদের উৎসাহ ও দায়বদ্ধতা বেড়েছে। ডেলেনি বলেন, কর্মীদের কাজের একটা দিন কমায় তাদের পাঁচ দিনের কাজ চার দিনে করতে হয়েছে। ফলে, অল্প সময়ের মধ্যে বেশি কাজ করার দক্ষতা তারা আয়ত্ত করেছেন। কিছু উদ্ভাবনী কৌশলও বের করেছেন অনেকেই। বেশি কাজের সময়ে কেউ যাতে তাদের বিরক্ত না করে, সেজন্য সেই সময়ে তারা ডেস্কে একটা ছোট পতাকা রেখেছেন।

Advertisement

এই পরিকল্পনার মূলে ছিলেন পারপিচুয়াল গার্ডিয়ানের প্রধান নির্বাহী অ্যান্ড্রু বার্নস। তিনি বলেন, আমার টিমকে আমি একটা উন্নততর কাজের পরিবেশ দিতে চাই বলেই ওই পরীক্ষা চালিয়েছি। আমি আপ্লুত যে, আমার টিম খুব ভালোভাবে সাড়া দিয়েছে। বার্নস জানান, সপ্তাহে তিনদিনের ছুটি যাতে সংস্থায় পাকাপাকিভাবে চালু করা যায়, সেই প্রস্তাব তিনি বোর্ড মিটিংয়ে দেবেন।

গত বছর ওই একই সংস্থায় সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছিল, ৫৪ শতাংশ কর্মী বলছেন, তারা তাদের কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেন। আর দু’মাসের পরীক্ষা চলার পর দেখা গেল, ওই কথা বলছেন ৭৮ শতাংশ কর্মী। কাজের জন্য মানসিক চাপ কমে গিয়েছে, সেটা গত বছর বলেছিলেন সাত শতাংশ, এখন সে কথা ২০ শতাংশ কর্মী বলেছেন।

টিটিএন/জেআইএম

Advertisement