এ বছর বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীন ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় কলাপাড়া উপজেলায় ৬টি কলেজের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪ জন। এদের মধ্যে ৩ জনই কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী। নিরলস প্রচেষ্টা ও অধ্যয়নের কাছেই ধরা দিয়েছে তাদের এ সাফল্য। সংগ্রামী ওই শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তাদের জীবনের লক্ষ্য ও ইচ্ছের কথা।
Advertisement
মো. শাহজালাল এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রথম হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে। বাবা দুলাল আকন পেশায় একজন জেলে। মা সুফিয় বেগম একজন গৃহিনী।
লেখাপড়ার প্রতি অদম্য আগ্রহ ও ভালো ফলাফল দেখে তারা উৎসাহ দিয়ে আসছেন সন্তানকে। দুই ছেলে ও এক মেয়ের লেখাপাড়ার খরচ বহন করা অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়ে তাদের কাছে। এসময় মেধাবী ছাত্র শাহজালালকে সহায়তায় এগিয়ে আসেন তার স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা।
এছাড়া আর্থিক সহায়তা হিসেবে ডাচ বাংলার বৃত্তি তার লেখাপড়ার পেছনে শক্তি জুগিয়েছে। মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকেও ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ব্যবসা শিক্ষা শাখায় তিনি জিপিএ-৫ পেয়েছেন। জীবনের লক্ষ্য হিসেবে ‘চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট’ হবার স্বপ্ন দেখছেন।
Advertisement
এইচএসসি পরীক্ষায় এমন সাফল্যে তার অনুভূতি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, রেজাল্ট পেয়ে আমি আনন্দে কেঁদে দিয়েছি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের প্রতি। বিশেষ করে কলেজের ইংরেজি স্যার আমাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন।
লাকী দেওয়ান আরেক জন সফল সংগ্রামী শিক্ষার্থী। বাবা রফিকুল ইসলাম একজন কৃষক। মা বিউটি বেগম গৃহিনী। ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় খেপুপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪.৯৫ পেয়েছেন। স্বামী সহিদ দেওয়ানের সংসারে এসেও কমে যায়নি তার লেখাপড়ার প্রতি বিন্দুমাত্র আন্তরিকতা। স্বামী, সন্তান ও সংসারের ঝামেলা মিটিয়ে তিনি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক শাখায় জিপিএ ৫ পেয়ে তিনি প্রমাণ করলেন, ‘ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়।’ ভবিষ্যৎ ইচ্ছের কথা জানতে চাইলে বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেট’ হওয়ার স্বপ্ন আছে। সেই লক্ষে পৌঁছাতে চেষ্টা চালিয়ে যাব।
কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের এ বছরের অন্যতম তারকা শিক্ষার্থী নাসিবা জান্নাত সিবা। বাবা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওই প্রতিষ্ঠানের ভূগোল বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক। মা সুমাইয়া নাসরিন মিনু একজন গৃহিনী। খেপুপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালের এসএসসিতে মানবিক শাখায় ৪.৮৮ পেয়েছেন। ২০১৮ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে তিনি কৃতি শিক্ষার্থীর তালিকাভুক্ত হন। ভবিষ্যতে তিনি ‘জজ’ হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
Advertisement
এমএএস/আরআইপি