দেশজুড়ে

কুষ্টিয়ায় আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমান রক্তাক্ত

কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে পুলিশের সামনেই আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে মারাত্মক আহত হয়েছেন তিনি।

Advertisement

রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়ায় আদালত চত্বরে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। হমলার পর রক্তাক্ত মাহমুদুর রহমানকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয় পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আদালত মাহমুদুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ওপর হামলা চালানো হয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আগে থেকে আদালত চত্বরে অবস্থান নেয়। জামিন মঞ্জুরের পর তারা মাহমুদুর রহমানকে আদালতের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে।

একপর্যায়ে সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি নিজের গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে একটি ইটের টুকরা লেগে রক্তাক্ত হন মাহমুদুর রহমান।

Advertisement

মাহমুদুর রহমানের সফরসঙ্গী বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান জানান, রোববার সকালে কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে আসেন মাহমুদুর রহমান। দুপুর ১২টায় কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এম এম মোর্শেদ ১০ হাজার টাকা জামানতে মাহমুদুর রহমানকে স্থায়ীভাবে জামিন দেন। জামিন মঞ্জুরের পর থেকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করেন। এ সময় তারা মাহমুদুর রহমানের বিচার চেয়ে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মাহমুদুর রহমান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এম এম মোর্শেদের এজলাস কক্ষে অবস্থান করেন। এর মধ্যে কয়েক দফায় এজলাস কক্ষ থেকে মাহমুদুর রহমান বের হওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তাকে বহন করা প্রাইভেটকার দুই দফায় তাকে নেয়ার জন্য আসলেও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা গাড়ি ধাওয়া করে। একপর্যায়ে দুপুরে মাহমুদুর রহমান ফেসবুক লাইভে এসে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সরকারের সমালোচনা করে প্রায় ৪ মিনিট বক্তব্য দেন।

শামিমুর রহমান বলেন, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এম এম মোর্শেদের এজলাস কক্ষ থেকে প্রাইভেটকার নিয়ে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার সময় আদালত চত্বরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের হামলার মুখে পড়েন মাহমুদুর রহমান। হামলাকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে মাহমুদুর রহমান গাড়ি থেকে নেমে কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পিপি মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামস তানিম মুক্তির চেম্বারে ঢুকে পড়েন। সেখানেও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালান। হামলায় মাহমুদুর রহমান গুরুতর আহত হন। মাহমুদুর রহমানের ব্যবহৃত গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়। একপর্যায়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশেরে ওসি নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে রক্তাক্ত অবস্থায় মাহমুদুর রহমানকে উদ্ধার করে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ায় মামলা হয়। ওই মামলায় জামিন পেতে কুষ্টিয়া আদালতে যান তিনি। সেই মামলায় আজ তাকে জামিন দেন আদালত।

আল মামুন সাগর/এএম/আরআইপি

Advertisement