দেশজুড়ে

সহমর্মিতা পেতেই পথসভায় ককটেল হামলা

ভোটারদের সহমর্মিতা পেতেই নিজেদের নির্বাচনী পথসভায় ককটেল হামলা চালিয়েছে বিএনপি। রোববার দুপুরে নিজ দফতরে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার। হামলায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান মন্টুর বরাদ দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

এর আগে শনিবার রাত পৌনে ২টার দিকে নগরীর রামচন্দ্রপুর এলাকার নিজ বাসা থেকে মন্টুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ১৭ জুলাই বোমা হামলার দুইদিন পর ১৯ জুলাই বিষয়টি নিয়ে মোবাইল ফোনে রাজশাহী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মুন্টু কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর সঙ্গে কথা বলেন। যাতে তিনি স্বীকার করেন এবং দুইজন হামলাকারির নাম উল্লেখ্য করেন। তাদের কথোপকথন পুলিশের হাতে আসলে মতিউর রহমান মুন্টুকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজেরাই বোমা হামলা কথা স্বীকার করেছে মুন্টু। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই বোমা হামলায় আরও কে কে জড়িত আছে তা বের করা হবে।

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে ওই কথোপকথন সাংবাদিকদের শোনান কমিশনার। ওই অডিওটি মন্টু ও টিপুর বলে নিশ্চিত করেন। কথোপকথনে যা আছে-

-ভাই (টিপু বলে চিহ্নিত)

-ভাল আছ? (মণ্টু হিসেবে চিহ্নিত)

-আছি ভাই। (টিপু)

Advertisement

-এই কালকে কাজ-কাম করেছি, প্রচন্ড রোদের তাপে। জিয়াউর অসুস্থ। তো গত পরশুদিন যে ঘটনা ঘটেছে, শুনছো তো নাকি? (মণ্টু)

-এই একটু শুনেছি, বেশি শুনি নাই। বোম মেরেছে এইটা তো? (টিপু)

-হ্যাঁ, (মণ্টু)

-সেটা তো জানি। (টিপু)

-কারা করলো, এটা কি জান? (মণ্টু )

-অ্যা? (টিপু)

-কারা করেছে এটা কি জানো? (মণ্টু)

-তা জানি না (টিপু)

-যাক, আমি যে কথা বলবো ওটা হজম করবা, জাগা মতো পারলে বলবা। দুই ভাই জড়িত। (মণ্টু)

-অ্যা? (টিপু)

-আমাদের দুইজন জড়িত। যে দুইজনকে দিয়ে কাজ করানো হয়েছে, ভাইয়ার কাছে ক্রেডিট নেয়ার জন্যে, এই বোম্ব ফেলেছে। হ্যাঁ? ঠিক আছে? (মণ্টু)

-কোন দুই ভাই? (টিপু)

-তোমার নাটোর আর আমার খালেক। ওই যে শাহীন শওকত (বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক)। (মণ্টু)

-এইটা আমার বিশ্বাস হয়। (টিপু)

-জাবেদ হলো, আমার শাহীন শওকত ভাইয়ের লোক, জাবেদ। (মণ্টু)

-না, ঠিক আছে। এটা আমার বিশ্বাস হয়। (টিপু)

-এইটা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, প্রায় সব ঠিক হয়ে গেছে। সব ঠিক করেছি। (মণ্টু)

প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই সকালে সাগরপাড়া বটতলা মোড়ে বুলবুলের নির্বাচনী পথসভা চলছিল। এতে বক্তব্য দিচ্ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রূহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক শহীন শওকত, জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু ও সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু প্রমুখ। এ সময় মুখোশ পরা ছয়জন দুর্বৃত্ত তিনটি মোটরসাইকেল যোগে এসে সভাস্থলে তিনটি ককটেল ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। এসময় আহত হন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান, বেসরকারি টেলিভিশন বাংলাভিশনের রাজশাহী প্রতিনিধি পরিতোষ চৌধুরি আদিত্য এবং স্থানীয় স্বপন কর্মকার। এ ঘটনায় আরও ১০-১২ জন কর্মী আহতসহ হামলায় আওয়ামী লীগ জড়িত বলে দাবি করেছেন দলটির নেতারা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপিই এ হামলা চালিয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এ ঘটনায় পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএ/পিআর