ক্যাম্পাস

শর্তপূরণে ব্যর্থ হলেও রাবিতে অধিভুক্তি হচ্ছে নতুন কলেজ

অবকাঠামো ও জনবলসহ গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলী পূরণে ব্যর্থ হলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন কলেজ। কখনও বাণিজ্যিক ভবন কখনও ভাড়া বাড়িতে কলেজ শুরুর কিছুদিন না যেতেই কিছু কিছু কলেজ বন্ধ হলেও এ অবস্থার মধ্যে আরও ২টি কলেজ অধিভূক্তির অনুমোদন দিতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

অনুসন্ধানে জানা যায়, কলেজ অধিভুক্তির জন্য সংবিধিতে যে অবকাঠামোগত মোট ১৩ শর্তের ১০টি শর্ত পূরণ করতে পারেনি কোনো কলেজই। তাছাড়া জনবল সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে কলেজ অধিভুক্তির আবেদন করা হচ্ছে। যেগুলো সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কলেজ অধিভুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়তি আয়ের পথ তৈরি হচ্ছে ঠিকই তবে শিক্ষার প্রসারে কলেজগুলো কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। এরপরও অধিভুক্ত করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বর্তমান অধিভুক্ত মোট কলেজের সংখ্যা ১৪টি। যার মধ্যে ১১টি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ৩টি কৃষি কলেজ রয়েছে। যার একটি অ্যাডভান্স ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। কলেজ অধিভুক্তি সংবিধিতে বর্ণিত প্রথম শর্ত কলেজের নামে ক্রয়কৃত নিজস্ব জায়গার ওপরে কলেজ ভবন থাকতে হবে নির্দেশনা থাকলেও ভাড়া বাড়িতে কলেজ পরিচালনা করছে এই কলেজটি। যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৫ জন। শুধু অ্যাডভান্স নয় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহী শহরের অধিভুক্ত কলেজগুলোতেও একই অবস্থা। অধিকাংশ কলেজই ভাড়া ভবনে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। একটি অথবা দুইটি কক্ষে চলে এই সব কার্যক্রম। শিক্ষার্থী পাচ্ছে না, শিক্ষক চলে যাচ্ছে এমন সমস্যা নিত্যদিনের। এর মধ্যে শিক্ষার্থী না পাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে রাজশাহীস্থ ইফসিলন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও গ্লোবাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামের দুটি কলেজ।

কলেজগুলোর হালচাল এমনই হলেও নতুন দুইটি কলেজ অধিভুক্ত করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দিনাজপুরে আনোয়ারা কলেজ অব বায়ো সায়েন্স নামে একটি কৃষি কলেজ ও কেএসএফএল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এই দুইটি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্তির আবেদন জমা পড়ে আছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিদর্শক দফতর।

Advertisement

এবিষয়ে দফতর সূত্র জানায়, আগামী শিক্ষা পরিষদের সভায় অধিভুক্তির সুপারিশ করা হবে কলেজ দুটি। শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলেও কলেজগুলোর অধিভুক্তির সিদ্ধান্ত উচ্চশিক্ষার প্রসারের কাজটি হোঁচট খাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োলোজিক্যাল সায়েন্সের পরিচালক অধ্যাপক ড. মঞ্জুর হোসেন বলেন, যখন একটা আইন ভাঙা হয় তখন পুরো পরিবেশ বা সিস্টেম লস হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার পরিবেশটাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কলেজগুলোর অধিভুক্তির ক্ষেত্রেও একই সমস্যা। উচিত হবে কলেজগুলোর ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া এবং প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণের মাধ্যমে তাদেরকে অধিভুক্ত করা।

শর্ত পূরণ না হলেও কলেজগুলোর অধিভুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে সমস্যাগুলো স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক ড. এম মুজিবুর রহমান বলেন, কলেজগুলো একধরনের প্রতারণা করে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। যেমন প্রথমে একটি ভবন দেখায়, পরে দেখা যায় ভবনটি স্থানান্তর করে ফেলেছে। শিক্ষক ২০ জন দেখালেও অধিভুক্তির পর শিক্ষক সংখ্যা কমে যায়। এ রকম বেশ কিছু সমস্যা তৈরি করে তারা। তবে আমাদের চেষ্টা আছে যারা শর্ত পূরণ করবে না তাদেরকে অধিভুক্তি বাতিল করে দেয়া এবং যারা শর্ত ভঙ্গ করেছে তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে।

আরএ/এমএস

Advertisement