দেশজুড়ে

শখে নার্সারি করে লাখপতি হারুন

ফেনীর ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হারুন অর রশিদ শখের বসে নার্সারি করেন। সরকারি চাকরির পাশাপাশি নিজ বাড়ির পাশের পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে জমি বর্গা নিয়ে মডার্ণ নার্সারিটি গড়ে তোলেন। গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, ইন্ডিয়ান রঙ্গণ ও বিভিন্ন ফলসহ ৭০টি প্রজাতির চারা বিক্রি করে বছরে তিনি ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় করেন।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা যায়, নার্সারিতে একান্ত মনে কাজ করছেন হারুন অর রশিদ। তার সঙ্গে আরও চারজন কর্মচারীও রয়েছে। এ সময় নার্সারির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে অন্যের ৪০ শতক জমি বর্গা নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির চারা লাগিয়ে একটি নার্সারি তৈরি করেন। এ নার্সারিতে ৭০টিরও বেশি প্রজাতির গাছ রয়েছে। তার নার্সারির গাছ নিতে ও দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন।

নার্সারির চারাগুলো পরিচর্যা করার জন্য ৪ জন কর্মচারী রয়েছে। অফিস শেষে কর্মচারীদের সঙ্গে নিড়ানী-কাস্তে-কোদাল হাতে নিয়ে নার্সারিতে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি নিজেও। চলে রাত পর্যন্ত।

হারুন অর রশিদের নার্সারিতে গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, গাদা, নয়নতারা, রজনীগন্দা, বেলি, ইন্ডিয়ান রঙ্গণসহ ২০ প্রজাতির ফুলের চারা ও আপেল, কমলা, পেয়ারা, কাঁঠাল, লেবু, জাম্বুরা, আম, সপেদা, আতাফল, জলপাই, ডালিম, আনারস, আঙুরসহ ৩০ টি প্রজাতির ফলজ এবং ঔষধি গাছের মধ্যে রয়েছে অর্জুন, নিম, হরিতকি, বহেরা, অ্যালোভেরা, তুলসী, আমলকী, শাকসবজির মধ্যে সিম, লাউ, করলা, ঝিঙ্গা, টমেটো, বেগুন, কুমড়া, বরবটি, মরিচ লেটুসপাতাসহ শতাধিক প্রজাতির গাছ-গাছালি রয়েছে।

Advertisement

হারুন অর রশিদ বলেন, গাছের চারাকে পোকা দমনের হাত থেকে রক্ষা করতে কেরেট, মার্শাল, নিউবিট, রেডিসিন গোল্ড ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এর পাশাপাশি নার্সারির ভেতর একটি পুকুর রয়েছে। এতে কই, শিং, কাতল, মাগুর, তেলাপিয়া, বোয়াল আরও অনেক প্রজাতির মাছ চাষ করেন। প্রতি বছর ওই মাছ থেকে অনেক টাকা আয় করেন। তার নার্সারিতে আকার ভেদে চারা প্রতি বিক্রি করেন ৫-১০০০ টাকা পর্যন্ত। এখান থেকে তিনি প্রতিবছর দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ করেন। এ ছাড়াও প্রতি বর্ষা মৌসুমে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিনামূল্যে গাছের চারা দিয়ে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, শখের বসে নার্সারিটি গড়ে তোলার সময় তৎকালীন সরকারি কলেজের প্রয়াত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন খান তাকে সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে ফলজ, বনজ এবং ওষধি চারা নিয়ে আসতে পরামর্শ দিতেন।

আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, নার্সারি শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কোনো ধরনের সহযোগীতা পাননি। এবং কেউ কখনো এসেও দেখে যাননি। তবে স্ত্রী, ২ ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছে তার।

রাশেদুল হাসান/আরএ/পিআর

Advertisement