হবিগঞ্জবাসীর রেলপথে যাতায়াতের একমাত্র ভরসাস্থল হলো শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশন। সড়ক, মহাসড়কের বেহাল অবস্থা ও ঘন ঘন সড়ক দুঘর্টনার কারণে এ স্টেশনে দিন দিন যাত্রীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। কিন্তু সে তুলনায় টিকিট সংখ্যা খুবই কম। এতে করে যাত্রীদের দুভোর্গ দিন দিন বেড়েই চলছে। শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন ট্রেনের প্রথম শ্রেণির ২টি বার্থ ও ১৫ অক্টোবর থেকে পাহাড়িকা ট্রেনের বরাদ্ধকৃত ৪টি এসি আসন বাতিল করা হয়েছে। যা থেকে মাসিক আয় ছিল ৭৮ হাজার ৮ শ ৩২ টাকা। এছাড়া চলতি বছরের ১৫ মে থেকে ঢাকাগামী উপবন ট্রেনের বরাদ্ধকৃত ‘ড’ বগি বাতিল করা হয়েছে। যার আসন সংখ্যা ছিল ২৫টি। এদিকে, ১২ মে থেকে জয়েন্তিকা ট্রেনের ‘ট’ বগি না চলায় ১৫টি টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে। ফলে মাসে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা আয় কমেছে। সব মিলিয়ে এ স্টেশনে যাত্রীখাত থেকে মাসে প্রায় ৩ লাখ টাকার আয় কমে গেছে। টিকিটের দাম বাড়লেও সেবার মান নূন্যতম বাড়েনি। রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, প্লাটফরমের মধ্যেখানে যত সামান্য কিছু আসন রাখা হয়েছে। যা যাত্রীর তুলনায় অপ্রতুল। আর প্লাটফর্মের আশপাশে অবৈধ দোকানপাটের কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। দুটি যাত্রী বিশ্রামাগার থাকলেও বাথরুম, টয়লেট নষ্ট এবং প্রায় সময়ই বন্ধ থাকে। শত শত যাত্রী বিভিন্ন চায়ের দোকানে, প্লাটফরমের আনাচে-কানাচে ও পিলারের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে সময় পার করছেন। সারা প্লাটফরম জুড়ে ভাসমান লোকে লোকারণ্য। ঢাকাগামী ট্রেনে নিয়মিত যাতায়াত করেন হবিগঞ্জ শহরের ব্যবসায়ী মনির হোসেন। তিনি বলেন, সড়ক পথের চেয়ে রেলপথে ভ্রমণ আনন্দদায়ক। তাই ট্রেনের প্রতি আগ্রহ বেশি। কিন্তু কোনো কারণে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে না পারলে স্টেশনে এসে টিকেট না পেয়ে আসনবিহীন টিকিটে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করেন বলেন, সকল আন্তঃনগর ট্রেনের অধিকাংশ টিকেট কালোবাজারীদের হাতে চলে যায়। ফলে ১৯৫ টাকার টিকেট ৩০০ টাকায় কিনতে হয়। শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশন মাস্টার জাহাঙ্গীর আলম জানান, আন্তঃনগর ৪টি ট্রেনের বরাদ্ধকৃত টিকিট থেকে বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় ৫০টি টিকিট বাতিল করা হয়েছে। এতে মাসে প্রায় ৩ লাখ টাকার আয় কমেছে যাত্রীখাত থেকে। তিনি আরও জানান, আন্তঃনগর ট্রেনের বরাদ্ধকৃত আসনের বিপরীতে প্রতিদিন তিনগুণ যাত্রী এখান থেকে দেশের বিভিনস্থানে ভ্রমণ করেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই আসনবিহীন টিকিট নিচ্ছেন। কেউ কেউ বিনাটিকিটেও ভ্রমণ করেন। এতে করে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। তিনি বলেন, আসন বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তার বরাবরে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়েছে এবং হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. আবু জাহিরকে অবগত করলে তিনি রেলওয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবগত করলেও এখনো কোনো কিছইু হয়নি। কামরুজ্জামান আল রিয়াদ/এসএস/এমআরআই
Advertisement