ক্যাম্পাস

ইবি শিক্ষকের নিপীড়নে আমার মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক শিক্ষকের নিপীড়ন ও নির্যাতনে মানসিক ভারসাম্য হারানো সেই ছাত্রীর বাবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

Advertisement

শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই ছাত্রীর বাবার লিখিত অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বিষয়টি তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আগের তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি বাতিল করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, আমার মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্রী। গত ৪ জুলাই আমার মেয়ের এক বান্ধবীর ফোন কলে জানতে পারি, আমার মেয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে যত্রতত্র ছোটাছুটি করছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে আরও একজন ফোন করে মেয়ের অসুস্থতার সংবাদ দিয়ে তাকে কুষ্টিয়া থেকে নিয়ে আসার জন্য বলেন। ওই সময় আমার গ্রামের বাড়ি ফেনীতে ছিলাম। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবং ফেনী থেকে কুষ্টিয়া অনেক দূর বিধায় জরুরি ভিত্তিতে মেয়েকে নিয়ে আসার জন্য ঢাকা থেকে আমার ছেলে জাহিদুল হাসান তারেককে কুষ্টিয়া পাঠাই।

ছাত্রীর বাবা লিখিত অভিযোগে বলেন, আমার ছেলে কুষ্টিয়া যাওয়ার পর জানতে পারে, মেয়ের মানসিক ভারসাম্য হারানোর মূল কারণ ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সরকার। ওই শিক্ষক আমার মেয়েকে মানসিক নির্যাতন ও নিপীড়ন করায় সে মানসিক ভারসাম্য হারায়। বাড়িতে আসার পর আমার মেয়ে ওই শিক্ষকের খারাপ চরিত্র সম্পর্কে অভিযোগ করে। সে বলেছিল, তাকেসহ অন্যান্য মেয়েদের যৌন উত্ত্যক্ত করে শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সরকার।

Advertisement

ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের অসৎ চরিত্র এবং কুপ্রস্তাবের প্রতিবাদ করায় আমার মেয়েকে মৌখিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য করে সঞ্জয়। সেই সঙ্গে তাকে হুমকি দেয় ওই শিক্ষক। শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের নিপীড়নে আমার মেয়েটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। বর্তমানে আমার মেয়ে বার বার শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের হুমকির কথা এবং তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা কথা মনে করে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। একজন বাবা হয়ে আমার মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। সেই সঙ্গে শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই। যাতে আমার মেয়ের মতো আর কোনো মেয়ে মানসিক ভারসাম্য না হারায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নাসিম বানু বলেন, এটি বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। মেয়েটি এখনও অসুস্থ। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তে তার সুস্থ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/এএম/জেআইএম

Advertisement