১৯৬৮ সালে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। ঠিক ৫০ বছর পর বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ এবং দুর্ঘটনায় পতিত হতভাগ্য এক যাত্রীর হিমায়িত শরীর উদ্ধার হয়েছে।
Advertisement
গত ১ জুলাই পর্বতারোহীদের একটি দল ভারতের হিমাচল প্রদেশের হিমবাহ ঢাকা একটি বেস ক্যাম্পের পাশ থেকে বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ এবং এক যাত্রীর হিমায়িত শরীর উদ্ধার করেন। খবর-এনডিটিভি।
১৯৬৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনীর এএন-২৫ বিমানটি চন্ডিগড় থেকে লেহের উদ্দেশে ১০২ সেনা সদস্য নিয়ে রওনা হয়। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে পাইলট চন্ডিগড় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু লেহের সন্নিকটে হঠাৎ বিমানটি নিখোঁজ হয়।
পরে জানা যায়, বিমানটি হিমাচল প্রদেশের লাহাল উপত্যকায় বিধ্বস্ত হয়। ২০০৩ সালে পর্বতারোহীদের একটি অভিযানের সময় লাহালের হিমবাহ ঢাকা একটি অঞ্চল থেকে বিমানের কিছু ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়। সেসময়ও কয়েকটি মরদেহ উদ্ধার হয়।
Advertisement
সম্প্রতি ভারতীয় পর্বতারোহণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একটি পর্বতারোহণ দল চন্দ্রহাগা-১৩ শিকর পরিচ্ছন্ন অভিযানে বের হন। গত ১ জুলাই হিমবাহ ঢাকা একটি বেস ক্যাম্পের পাশ থেকে বিধ্বস্ত বিমানের অবশিষ্টাংশের সন্ধান পান তারা। এ সময় বিধ্বস্ত এক বিমানযাত্রীর হিমায়িত শরীরও তারা দেখতে পান।
অভিযান দলের দলের নেতা রাজিব রাওয়াত বলেন, তাদের দলের সদস্যরা বিমানটির ধ্বংসাবশেষের একটি অংশ দেখতে পান। ঠিক এর কয়েক মিটার দূরে এক সৈনিকের হিমায়িত শরীরও পড়ে থাকতে দেখেন তারা।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানান। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গত ১৬ জুলাই থেকে ওই স্থানে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৯৮ সেনা সদস্য ও চার ক্রু নিয়ে বিমানটি চন্ডিগড়ের রোহতং পাস থেকে উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।
Advertisement
দুর্ঘটনার পর মাসের পর মাস ওই অঞ্চলে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হয়। কিন্তু সেসময় কোনো ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মেলেনি। পরবর্তীতে ধারণা করা হয়, নিখোঁজ বিমানটি শত্রুরাষ্ট্র পাকিস্তানের সীমানায় বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমান বিধ্বস্তের কোনো আলামত না পেয়ে পরবর্তীতে উদ্ধার অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
৩৫ বছর পর ২০০৩ সালে বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষের একটির অংশের খোঁজ পান হিমালয়ের পর্বতারোহণ ইনস্টিটিউটের একটি ট্র্যাকিং পার্টি। সেসময় তারা হিমাচল প্রদেশের দক্ষিণ দাক্ষি হিমবাহে একটি মরদেহেরও সন্ধান পান।
পরবর্তীতে জানা যায়, উদ্ধার হওয়া মরদেহটি ভারতের সেনাবাহিনীর সদস্য সিপাহী বেলি রামের। তিনি ওই বিধ্বস্ত বিমানের যাত্রী ছিলেন।
পরে দেশটির সেনা ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি দল সেখানে ব্যাপক উদ্ধার তৎপরতা চালান। তারা সেখানে আরও কিছু বিমানযাত্রীর দেহাবশেষের সন্ধান পান। ২০০৭ সালে ওই অঞ্চল থেকে আরও চারটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সর্বশেষ গত ১ জুলাই ওই অঞ্চল থেকে এক সৈনিকের হিমায়িত শরীর উদ্ধার করা হয়।
এমএআর/আরআইপি