ক্যাম্পাস

‘দেশে অনেক সংবাদপত্র আছে কিন্তু বিশ্বাসযোগ্যতা নেই’

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, বাংলাদেশে ৪০০ এর অধিক সংবাদপত্র আছে। কিন্তু বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। পত্রিকাগুলোয় ইতিবাচক সংবাদের প্রবণতাও কম।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অনুষদ মিলনায়তনে ‘মিডিয়া কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস ইন বাংলাদেশ অ্যান্ড বিয়ন্ড’ শীর্ষক ৩ দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যোগাযোগ ও সাংবাদিকিতা বিভাগ দেশে প্রথমবারের মতো এ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সম্মেলনে ইউজিসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, সংবাদ ও সাংবাদিকদের নৈতিকতা সম্পন্ন হওয়া উচিত। হয়তো সাংবাদিকতা হতে চায়। কিন্তু মালিকপক্ষরা তা চায় না। অনেক সাংবাদিকদের বেতনও দেয়া হয় না। এসব কারণে তাদের সৃজনশীলতাও নষ্ট হয়ে পড়ছে।

মিডিয়া জনগণকে প্রভাবিত করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশেষ করে প্রিন্ট শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার করছে। কিন্তু বিকল্প মাধ্যম হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আরও বেশি শক্তিশালী। এখানে কোনটি সঠিক তা বুঝা দায়। তাই এটির জবাবদিহিতার প্রয়োজন।

Advertisement

এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ওপর জোরারোপ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস রুমে পড়ানোর জন্য নয়। এই ধরনের সেমিনার সম্মেলনের মাধ্যমে জ্ঞান সৃষ্টির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়।

দেশের প্রথম গণমাধ্যম বিষয়ক আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে দেশ-বিদেশের ৭২ জন গবেষক অর্ধ-শতাধিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। যেখানে তারা ৩ দিন বাংলাদেশ ও বহির্বিশ্বের গণমাধ্যম, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জসমূহের নানা বিষয় আলোচনা করেন।

বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সায়মা আলমের সঞ্চালনায় ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসাইন, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সম্মেলন আয়োজক কমিটির সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহাব উদ্দিন। এতে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় সভাপতিবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, তিন দিনের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে ৩টি প্ল্যানারি ও ১৫টি প্যারালাল অধিবেশনে ভাগ করা হয়। যেখানে ১৩টি সুনির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর ১৩টি প্যারালাল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্যে নির্ধারিত দুইটি পৃথক অধিবেশনেও গবেষকরা তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এদিকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিষয়ক এই সম্মেলনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের গণমাধ্যম ও যোগাযোগ গবেষক অধ্যাপক ড. বিপ্লব লৌহ চৌধুরী ও অধ্যাপক ড. সিএইচএসএন মূর্তি, রাশিয়ান অধ্যাপক ড. সের্গেহ দেভিদভ, চীনা অধ্যাপক ড. জিয়াওজি জু, মালয়েশিয়ান যোগাযোগ গবেষক অধ্যাপক ড. জমিলা হাজি আহমদ, নেপালের লক্ষণ দত্ত পান্ট, ভূটানের সাংবাদিক তাসহি দেমা, যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক উলদোজ সোহরাবি লারকি, পাকিস্তানি অধ্যাপক ড. আবিদা এজাজ।

Advertisement

ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভূটান, চীন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়াসহ মোট ২৯ জন প্রবন্ধকারও সম্মেলনে অংশ নেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, খুলনা, কুমিল্লা, ইউল্যাব, আইইউবি, বরেন্দ্র, ড্যাফোডিল ও পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গবেষণা প্রবন্ধ পাঠ করেন।

আবদুল্লাহ রাকীব/আরএ/জেআইএম