আন্তর্জাতিক

‘বিশ্বের সবচেয়ে নিগৃহীত জাতিতে পরিণত হচ্ছেন রোহিঙ্গারা’

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসি সুইং বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংস নির্যাতন ও দমন পীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রতি সমর্থন জানাতে পুরো বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। রোহিঙ্গাদের সহায়তায় এগিয়ে অাসতে মঙ্গলবার বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

Advertisement

সুইং বলেন, যে সকল রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে অবস্থিত কক্সবাজার জেলায় অস্থায়ী শিবিরে বসবাস করছেন তারা খারাপ আবহাওয়া, অর্থের অভাব এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ- এই ত্রিমুখী সমস্যা মোকাবেলা করছেন।

মিয়ানমার এবং বাংলাদেশে এক সপ্তাহের সফর শেষে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানরা এমন এক জাতিতে পরিণত হয়েছে যাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই এবং যারা বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত ও নিগৃহীত জাতি গোষ্ঠীতে পরিণত হতে যাচ্ছে।

আইওএম প্রধান রোহিঙ্গা ইস্যুতে জোরালো ভূমিকা পালনের জন্য আন্তর্জাতিক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এটি করতে ব্যর্থ হলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এ মুসলিম জাতির জীবনে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

Advertisement

গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রক্তক্ষয়ী অভিযানে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও রাখাইনের উত্তরে পুনর্বাসন করা হয়েছে ২০০ জনেরও কম রোহিঙ্গাকে।

রোহিঙ্গা নারীরা বলছেন, তারা নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের হাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের নিষ্ঠুর চিত্র তুলে ধরেছেন। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

মিয়ানমার বলছে, শুধুমাত্র রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরাই তাদের অভিযানের লক্ষ্য হয়েছে। যদিও সন্দেহভাজন কিছু রোহিঙ্গাকে হত্যার অভিযোগ স্বীকার করেছে সেনাবাহিনী।

গত এপ্রিলে মিয়ানমার সরকার জানায়, তারা পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারকে ফেরত নিয়েছে। তবে পরবর্তীতে এ নিয়ে বেশ সমালোচনা শুরু হয়। সেই সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, ওই পরিবারটি শূন্যরেখা থেকে রাখাইনে ফেরত গেছে।

Advertisement

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনের সহকারী সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু গ্লিমোর বলেন, গত বছরের আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে ধর্ষণের শিকার অনেক নারী শিগগিরই মা হবেন। শরণার্থী শিবিরে চলতি বছরে প্রায় ৪৮ হাজার সন্তান জন্ম দেবেন।

তবে এদের অধিকাংশই মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের শরণার্থী শিবিরে গোপনে অথবা বাঁশের খুপরি ঘরে কোনো ধরনের মেডিকেল সহায়তা ছাড়াই কঠিন এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন।

এসআইএস/এমএস