প্রথম চাকরিতে সবাই চায় সময়ে মতো অফিসে পৌঁছাতে। কারণ প্রথম দিন দেরি করে অফিসে গেলে তার সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ধারণা খারাপ হয়ে যেতে পারে।
Advertisement
কিন্তু প্রথম দিন সময়ে মতো কাজে যোগ দেয়া জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাব্যামা রাজ্যের ওয়াল্টার কার যে নজীর স্থাপন করেছেন সেটি সত্যিই অভাবনীয়। তিনি প্রথম দিন ঠিক মতো কাজে যোগ দেবার জন্য সারারাত ৩২ কি.মি. পায়ে হেঁটে সকালে তার কর্মস্থলে পৌঁছান।
তার গাড়িটি ভেঙ্গে যাবার কারণেই দীর্ঘ সময় পায়ে হেঁটে এ পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি। এ ঘটনা জানার পর কোম্পানির মালিক তাকে নতুন একটি গাড়ি উপহার দিয়েছেন।
ওয়াল্টার যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন সেখানে তার সঙ্গে দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তার দেখা হয়। ওয়াল্টারের চারিত্রিক দৃঢ়তা দেখে সে পুলিশ কর্মকর্তা তাকে সকালে নাশতা করাতে নিয়ে যান।
Advertisement
এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। সকলে তার চারিত্রিক দৃঢ়তার প্রশংসা করছেন।ওয়াল্টার যে কোম্পানিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তার নাম মুভিং ফার্ম। সেখানকার একজন গ্রাহক হলেন জেনি ল্যামি।
শুক্রবার সকাল আটটার দিকে তিনি এবং তার স্বামীর মুভিং ফার্মে যাবার কথা ছিল। সেজন্য তারা ভোরে ঘুম থেকে উঠেন। ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে তাদের বাড়ির কলিং বেল বেজে উঠে।
সে সময় ল্যামি দরজা খুললে ওয়াল্টারের সাথে দেখা হয়। তার সাথে ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তিনি ওয়াল্টারকে রাস্তা থেকে তুলে এনেছেন।
পেলহ্যাম পুলিশ বিভাগ এক টুইটর বার্তায় জানিয়েছে, ওয়াল্টারের মতো একজন মানুষের সাথে দেখা হওয়ায় তারা গর্বিত। ওয়াল্টার তাদের উপর প্রভাব তৈরি করেছে বলেও ওই বার্তায় উল্লেখ করা হয়।
Advertisement
ল্যামি বলেন, সে সারা রাত একা হাঁটছিল এমন একটা বিষয় আমি কল্পনাও করতে পারছি না। মধ্যরাতে একা হাঁটার সময় সে হয়তো ফিরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু সে এখানে না পৌঁছানো পর্যন্ত থামেনি।
মুভিং কোম্পানির প্রধান নির্বাহী লুক মার্কলিন এ খবর জানার পর তার কর্মচারীর সঙ্গে দেখা করেন। ওয়াল্টারের সঙ্গে চা পানের সময় কোম্পানির প্রধান নির্বাহী তাকে একটি গাড়ির চাবি হস্তান্তর করেন।
তখন ওয়াল্টার কিছুটা বিস্মিত হন। এরপর তিনি কোম্পানির প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে কোলাকুলি করেন এবং গাড়ির চাবিটি গ্রহণ করেন।
এদিকে ওয়াল্টারের নষ্ট হয়ে যাওয়া গাড়ি মেরামতের জন্য অনলাইনে একটি প্রচারণা শুরু হয়েছে। ওই প্রচারণায় আট হাজার ডলারের বেশি সাহায্য এসেছে। তিনি এ বছরের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে হেলথ সায়েন্সে ডিগ্রি নিতে চান।
মার্কিন মেরিন দলে যোগ দেবার ইচ্ছা রয়েছে ওয়াল্টারের। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি আমার প্রতিশ্রুতি দেখাতে চেয়েছি। আমি মানুষকে জানাতে চাই যে আপনি যদি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারেন, তাহলে কোন কিছুই চ্যালেঞ্জ নয়। কোন কিছুই অসম্ভব নয়, যদি আপনি সেটিকে অসম্ভব করে না তোলেন।
টিটিএন/আরআইপি