‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা সোনার চাকতি এখন ভুতুড়েভাবে মিশ্র ধাতুতে পরিণত হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আজকের পত্রপত্রিকা দেখেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে ৯৬৩ কেজি স্বর্ণ রাখা ছিল কিন্তু সেটি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের জায়গায় ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণে পরিণত হয়েছে। জমা রাখা হয়েছিল সোনার চাকতি, তা হয়ে গেছে মিশ্র ধাতু। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে এ ভয়ঙ্কর অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৯৬৩ কেজি স্বর্ণ পরীক্ষা করে বেশির ভাগের ক্ষেত্রে এ অনিয়ম পেয়েছে।’
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং সরকারের নীল নকশা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আওয়ামী লীগের নেতা’ আখ্যায়িত করে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘এ নির্বাচন কমিশন গঠনের শুরু থেকে সরকারের গলদ রয়েছে। গঠনের সময় লোক দেখানো আলোচনা করে তারা তাদের পরীক্ষিত লোকদের এখানে স্থান করে দিয়েছে। বিশেষ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনতার মঞ্চের নেতৃত্ব দিয়েছেন। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) যে কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরিচালনা করেছেন প্রত্যেকটি জায়গায় জনগণের পাশে না থেকে সরকারের আজ্ঞাবাহী হয়ে কাজ করে তাদের ভোট ডাকাতিতে সহযোগিতা করেছেন।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক নির্বাচন হবে, কেউ তা বিশ্বাস করে না। তাদের দ্বারা জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, এমনটি আশা করাও যায় না।’
‘সরকার তার সব কর্মকাণ্ড আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে করছে’- এমন মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘তারা আরও একটি পাতানো ও সাজানো নির্বাচন করে আবারও স্বৈরতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে চায়। শেখ হাসিনার অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। ৫ জানুয়ারি দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি।’
‘সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করাই বিএনপির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ’- উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগামীতে জনগণ যাতে তাদের ভোটাধিকার আদায় করতে পারে, এমন নির্বাচন আমাদের আদায় করে নিতে হবে। দেশ স্বৈরাচারমুক্ত না হলে এটা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। কোনো স্বৈরাচার ইচ্ছা করে ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে এ স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়ে আমাদের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। সংসদে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন, কোনো কোটাই থাকবে না। এখন তিনি তার কথা রাখছেন না।’
Advertisement
‘সরকার এতটাই ভীতু যে, ছাত্রদের ন্যায্য দাবি দাবিয়ে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী সংসদে প্রতারণা করলেন।’আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, সাবেক সংসদ সদস্য আহসান হাবিব লিঙ্কন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, বাগেরহাট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
কেএইচ/এমএআর/জেআইএম