দেশজুড়ে

মাদরাসার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে

মাদরাসার নাম ব্যবহার করে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা নূর মোহাম্মদ মোল্যার বিরুদ্ধে। নদীতে বিলীন হওয়া মাদরাসার সাইনবোর্ড নিজ বাড়িতে লাগিয়ে তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ করে চলেছেন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের ইন্তাজ মোল্যার ডাঙ্গী গ্রামে ফুলজান খাতুন মহিলা মাদরাসাটি বেশ কয়েক বছর আগেই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূর মোহাম্মদ মোল্যা বিলীন হয়ে যাওয়া মাদরাসার সাইনবোর্ডটি তার নিজ বসতঘরে টাঙিয়ে মাদরাসার নামের বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ নিজের পকেটে ভরছেন।

গত ১২ জুলাই ওই মাদরাসার নামে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত এক মেট্রিক টন জিআর চাল তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া কিছুদিন আগে ফরিদপুর জেলা পরিষদ থেকে ওই মাদরাসার নামে এক লাখ টাকাও নিয়েছেন বলে জানা যায়।

সরেজমিনে জানা যায়, লম্বাকৃতির দোচালা টিনের ঘরের সামনে ‘ফুলজান খাতুন মহিলা মাদরাসা’নামক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। ওই ঘরের মধ্যে কোনো শিক্ষক বা ছাত্রছাত্রী নেই। ঘরের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূর মোহাম্মদ মোল্যা তার দ্বিতীয় স্ত্রী হালিমা বেগমকে নিয়ে বসবাস করছেন। অথচ মাদরাসার সাইনবোর্ডে উল্লেখ রয়েছে- এখানে নূরানী মক্তব বিভাগ, নাজেরা বিভাগ, আদর্শ হেফজ বিভাগ ও কিতাব বিভাগ, বাংলা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা দেয়া হয়। উন্নতমানের হাতের লেখার জন্য বিশেষভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া মাতৃস্নেহে ঘরোয়া ও পর্দা সম্মত ব্যবস্থা, যোগ্য ও আদর্শ শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত, স্কুল কলেজের ছাত্রী ও বয়স্ক মহিলাদের জন্য বিশুদ্ধভাবে কোরান, নামাজ, মাসআলা, মাসনুনসহ দোয়া শিক্ষা ব্যবস্থান কথা উল্লেখ আছে।

Advertisement

আমজাদ প্রামানিক, কবির প্রামানিকসহ এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা তার ছোট স্ত্রীকে নিয়ে ওই ঘরে বসবাস করেন। কোনোদিন কেউ কোনো প্রকার দ্বিনী শিক্ষা দেয় নাই বা নেয় নাই। মাদরাসার নামের একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে সরকারি বরাদ্দ তছরূপ করা ছাড়া সমাজের কোনো উপকার আসে নাই। কয়দিন আগেও উপজেলা ত্রাণ অফিস থেকে জিআর চাল বরাদ্দ নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতা নূর মোহাম্মাদ জানান, মাদরাসায় আপাতত কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী নেই। তার ছেলের বউ ইয়াছমিন আক্তার মাদরাসার একমাত্র শিক্ষক হিসেবে কাজ করত। সে সন্তান সম্ভবা হওয়ায় এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে খুব শীঘ্রই মাদরাসায় শিক্ষক এনে দ্বিনি শিক্ষা চালু করবেন বলে তিনি জানান।

চরভদ্রাসন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু এহসান বলেন, গত ১২ জুলাই মাদরাসার নামে এক মেট্রিক টন জিআর চালের ডিও চলে গেছে। আমি এলাকাবাসীর অভিযোগ শুনেছি, প্রকৃতপক্ষে প্রতিষ্ঠানটি মাদ্রাসা কিনা শিগগিরই আমি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করবো।

চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন নাহার বলেন, খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Advertisement

আরএ/পিআর