খেলাধুলা

মদ্রিচের সন্তানদের সান্ত্বনা দিলেন ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ

বিশ্বকাপ শুধুই আনন্দ আর উৎসবের নয়। এক প্রান্তে যদি উৎসবের ঢেউ তৈরি হয় তো অন্য প্রান্তে ঘোর অমানিশা। স্তব্ধ নীরবতা নেমে আসে সেই অংশে। হতাশায় মুষড়ে পড়ে গ্যালারির পুরো একটি অংশ এবং পুরো একটি দেশ। বিশ্বকাপের ফাইনাল শুরুর আগে যারা উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে আসে, ফাইনালে হারের পর তাদের সব আশা-প্রত্যাশার মৃত্যু ঘটে। হতাশা আর নিদারুণ কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরে যায় তারা।

Advertisement

কষ্টটা সম্ভবত সবচেয়ে বেশি যে দলটি হেরে যায় সে দলের খেলোয়াড়দের পরিবারের। আর যদি পরিবারের সদস্যরা হয় শিশু-কিশোর এবং তারা বুঝতে শেখে বিষয়টা কি, তখন পরিস্থিতিটা হয়ে দাঁড়ায় ভিন্ন রমক। একেবারে অনির্বচনীয়।

তেমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ক্রোয়েশিয়া শিবিরে। বাবা মাঠের সেরা তারকা। বিশ্বকাপ জিতবেন- এই আশায় মাঠে এসেছিলেন লুকা মদ্রিচের দুই শিশু সন্তান ইভানো মদ্রিচ এবং এমা মদ্রিচ। বয়স হবে বড় জোর ৫-৭ এর মধ্যে। কিন্তু বাবা পারলেন না। ফ্রান্সের দুরন্ত তারুণ্যের সামনে পরাজিত হতে হয়েছে ক্রোয়েশিয়াকে। ৪-২ গোলের বড় ব্যবধানে। পগবা, এমবাপে, গ্রিজম্যানরা করেছেন অসাধারণ সব গোল।

ফ্রান্স যখন বিজয় উৎসবে মাতোয়ারা, তখন হতাশা ঘিরে ধরেছিল ক্রোয়েশিয়ার ড্রেসিংরুমে বসে থাকা লুকা মদ্রিচের দুই সন্তানকেও। বাবার পরাজয় ছোট্ট কোমল হৃদয় হয়তো মেনে নিতে পারছিল না। কেঁদেছেও তারা। তবে, তাদের এই হতাশা মুহূর্তের মধ্যে দুর করে দিতে পেরেছিলেন ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

Advertisement

বিশ্বকাপের ফাইনালের পর পুরস্কার বিতরণও শেষ। সবাই ফিরে গেছেন যে যার ড্রেসিংরুমে। সেখানেই দুই দল নিজেদের অংশে অবস্থান করছিল। ফ্রান্স ফুটবলাররা বিজয়োৎসবে মত্ত। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো, ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ক্রোয়েশিয়া প্রেসিডেন্ট কলিন্দা গ্রেভার কিতোরোভিচ এবং রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারা অংশ নেন ফ্রান্সের বিজয়োৎসবে।

এরপর তারা সবাই চলে আসেন ক্রোয়েশিয়ার ড্রেসিংরুমে। সেখানে নীরবতা, নিস্তব্ধতা। সবার মুখই হতাশায় শুকনো। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বনেতাদের কাছে পেয়ে কিছুটা উজ্জীবিত হয়ে উঠলেন ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলাররা। ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট, রাশিয়া প্রেসিডেন্ট, ফিফা প্রেসিডেন্ট, সর্বোপরি নিজ দেশের প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে করমর্দন করেন ক্রোয়াট ফুটবলাররা।

তবে যে দৃশ্যটি সবার নজর কেড়েছে, সেটা হচ্ছে লুকা মদ্রিচের দুই শিশুকে এগিয়ে গিয়ে সান্ত্বনা দিতে দেখা যায় ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে। ফরাসি প্রেসিডেন্টের সান্ত্বনা পেয়ে একটু হাসি ফুটে উঠেছিল দুই শিশুর মুখে। এই ছবিটাই অবশ্য পরে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

আইএইচএস/এমএস

Advertisement