আইন-আদালত

কুমিল্লার দুই মামলায় খালেদার জামিন শুনানি ১৯ জুলাই

 

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হত্যা ও নাশকতার অভিযোগে পৃথক দুই মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর আজ দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আজ আংশিক শুনানি শেষে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১৯ জুলাই দিন ধার্য করে মামলার কার্যক্রম মুলতবি করেন হাইকোর্ট।

Advertisement

সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এই আদেশ দেন।

আদালতে ওই দিন খালেদার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন একেএম এহসানুর রহান, অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা, সালমা সুলতানা সোমা প্রমুখ। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ৪৯৮ ধারা অনুযায়ী এ মামলায় হাইকোর্টের জামিন শুনানির এখতিয়ার রয়েছে। হাইকোর্ট আইনগতভাবে তা প্রয়োগ করে জামিন দিয়েছেন এবং আপিল বিভাগের এখতিয়ার আছে কিনা তা নির্ধারণ করতে বলেছেন।

Advertisement

তিনি বলেন, উভয় আদালতেরই এখতিয়ার রয়েছে। আদালত সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন। এটা যথাযথ হয়েছে।

খালেদার আইনজীবীর জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, হাইকোর্ট জামিন দিতে পারে না। শেষ আদালত থেকে যদি নামঞ্জুর করা হয়। এখানে শেষ কোর্ট রিফিউজ করেনি। অতএব হাইকোর্টের জামিন দেয়ার এখতিয়ার নেই।

এর আগে গত ১২ জুলাই মামলা দুটির জামিন নিয়ে জারি করা রুলের শুনানির জন্য আজকের (১৬ জুলাই) দিন ধার্য ছিল।

গত ২ জুলাই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হত্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া ৬ মাসের জামিন স্থগিত করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সঙ্গে সঙ্গে, জামিন নিয়ে জারি করা হাইকোর্টের রুল চার সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

Advertisement

রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী হাইকোর্টে রুল শুনানির জন্য ১০ জুলাই দিন ঠিক করেন। পরে তা পিছিয়ে ১২ জুলাই দিন ঠিক করেন। আজ নির্ধারিত দিনে তা পিছিয়ে ১৬ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।

গত ২৮ মে কুমিল্লার নাশকতার দুই মামলায় ৬ মাসের জামিন পান বিএনপি চেয়ারপারসন। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। কিন্তু হত্যার অভিযোগে করা মামলায় খালেদার জামিন মঞ্জুর করেননি হাইকোর্ট।

এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর গত ২৯ মে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিনাদেশ স্থগিত করেন এবং ৩১ মে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির আদেশ দেন।

৩১ মে শুনানির পর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত রাখেন এবং রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে আদেশ দেন। ২৪ জুন এ বিষয়ে শুনানি শেষে ২ জুলাই আদেশের দিন ধার্য করা হয়। ২ জুলাই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় করা হত্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে, এ মামলায় জামিন বিষয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল চার সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে ২০ দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামে দুষ্কৃতিকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে আইকন পরিবহনের একটি বাসের সাত যাত্রীর মৃত্যু হয়। আহত হন আরও ২০ জন।

এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। একই ঘটনাই বিস্ফোরক দ্রব্যের আইনে অপর একটি মামলা করা হয়। ওই মামলা পরবর্তীতে ধারা পরিবর্তন করে নাশকতার মামলা করা হয় বলে জানান আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান।

এফএইচ/জেএইচ/আরআইপি