ধর্ম

মৃত্যুর দিনকে ভয় করতে হবে কেন?

কুরআনুল কারিমে অনেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার কাছে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণের উপদেশ প্রদান করেছেন। বার বার সতর্ক করেছেন অন্যায় কাজ থেকে ফিরে থাকার। প্রত্যেককেই তাদের কাজের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় ও জবাবদিহিতার বিষয়টি সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন।

Advertisement

মানুষ যেন পরকালের প্রস্তুতি গ্রহণে অন্যায় কাজ ছেড়ে ভালো কাজ বেশি বেশি করতে পারে সে ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করে বলেছেন, আল্লাহ তাআলা ভালো ও মন্দ কাজের প্রতিদান দিতে কারো জুলুম করেবেন না।

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে তার কাছে ফিরে যাওয়ার দিনক্ষণ ও পরকালকে ভয় করার কথা উল্লেখ করে ঘোষণা করেন-

আয়াতের অনুবাদআয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণসুরা বাকারার ২৮১ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার কাছে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। যাতে মানুষ দুনিয়ার প্রতিটি কাজে তাঁকে ভয় করে। আর আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রতি ভালো কাজের প্রতিদান প্রদানে এবং মন্দ কাজের শাস্তি প্রদানে জুলুম করে না।

Advertisement

উল্লেখিত আয়াত সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, এটি কুরআনুল কারিমের সর্বশেষ আয়াত। এ আয়াতটি নাজিল হওয়ার পর প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৯ দিন জীবিত ছিলেন।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতে এ আয়াত নাজিল হওয়ার পর প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৩১ দিন জীবিত ছিলেন।

আবার কেউ কেউ বলেছেন, এ আয়াত নাজিলের পর প্রিয়নবি ৭দিন জীবিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী আয়াতে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির সঙ্গে বিনম্র আচরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর যদি ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির ঋণ মাফ করে দেয়া হয় তবে তা অতি উত্তম বলে ঘোষণা করা হয়েছে। অতঃপর আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা

Advertisement

ইরশাদ করেন-(হে মানুষ!) তোমরা সে দিনকে ভয় কর, যেদিন তোমরা আল্লাহর কাছে ফিরে যাবে; সেদিন তোমাদের কর্মফল দেয়া হবে। সঙ্গত কারণেই তোমরা সেদিন আল্লাহর কাছে দয়াপ্রার্থী হবে।

অতএব আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত ফিরে যাওয়ার দিনটি আসার আগেই মানুষের প্রতি দয়া কর। অভাবগ্রস্ত ঋণী ব্যক্তির প্রতি দয়া করে তার ঋণ ক্ষমা করে দাও। তাদের প্রতি নির্দয় হইওনা। কেননা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘যে কারো প্রতি দয়া করে না তার প্রতিও দয়া করা হবে না।’অতঃপর আল্লাহ তআলা বলেন, ‘প্রত্যেকেকে তার ভাল বা মন্দ কাজের বদলা দেয়া হবে। প্রত্যেকৈই তার আমলের পরিমাণ কর্মফল ভোগ করবে। এতে কারো প্রতি জুলুম করা হবে না।

এখানে জুলুম করার বিষয় হলো এমন যে-তাদের ভালো কাজের তুলনায় সাওয়াব বা প্রতিদান কম করার মাধ্যমে যেমন কোনো জুলুম করা যাবে না। ঠিক তেমনিভাবে অপরাধের পরিমাণ অনুসারে অধিকতর শাস্তিও প্রদান করা হবে না।

আরও পড়ুন- ঋণ গ্রহীতা অভাবগ্রস্ত হলে যা করণীয় (সুরা বাকারা : আয়াত ২৮০)

সুতরাং পরকালীন চিরস্থায়ী জীবনের প্রস্তুতি গ্রহণে আল্লাহকে বেশি বেশি ভয় করা। অন্যায় কাজ পরিহার করা। শেষ বিচারের দিন আল্লাহ তাআলার প্রতি হাজির হওয়ার বিষয়টি বেশি বেশি স্মরণ করে দুনিয়ার জীবনে যথাযথ দায়িত্ব পালন করার প্রতি সচেষ্ট হওয়া।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মানুষের প্রতি দয়া করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআলাকে বেশি বেশি ভয় করার মানসিকতা তৈরি করে দিন। অন্যায় পরিহার করে বেশি বেশি ভালো কাজ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম