বিশ্বকাপের ফাইনাল বলে কথা। আগের রাতে ঘুমানোর সময়ই সঙ্গীদের বলে রেখেছিলাম সকাল সকাল লুঝনিকি স্টেডিয়ামে যেতে হবে। ফাইনালের দিন থাকে নানা আনুষ্ঠানিকতা, অন্যান্য দিনের মতো সহজে স্টেডিয়াম চত্বরে প্রবেশ করা যায় না। আবার একটু দেরিতে মিডিয়া সেন্টারে ঢুকলে পছন্দসই কাজের জায়গাটাও পাওয়া যায় না। তাছাড়া ফাইনালের দিন লুঝনিকি স্টেডিয়ামের আবহটা কেমন থাকে সেটাও দেখতে হবে- এসব চিন্তা করেই একটু সকাল সকাল স্টেডিয়ামে আসা।
Advertisement
মেট্রো রেলে করে লুঝনিকি স্টেডিয়ামে গেলে দুটি স্টেশন ব্যবহার করা যায়- স্পর্তিভনায়া ও বড়ভিয়া গোরে। দ্বিতীয় স্টেশন দিয়ে নামলেই লুঝনিকি স্টেডিয়ামে প্রবেশের নিরাপত্তা চেক পয়েন্ট। সেখানেই দেখা প্যারাগুয়ের সাবেক গোলরক্ষক হোসে লুইস ফেলিক্স চিলাভার্টের সঙ্গে। নিজ দেশের একটি টেলিভিশনে বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করছেন বিশ্বকাপে। নিজের পরিচয় দিতেই চিলাভার্ট বলে উঠলেন-‘ওহ, বাংলাদেশ! আই লাভ বাংলাদেশ।’
বাংলাদেশকে কেন ভালোবাসেন? প্রশ্ন করতেই চিলাভার্ট বললেন, ‘আমি শুনেছি, তোমাদের দেশে নাকি আমাকে অনেকে পছন্দ করে।’ বললাম, ‘হ্যাঁ। অনেকের পছন্দের গোলরক্ষক তুমি।’ আমাদের দুই জনের গন্তব্যই মিডিয়া সেন্টার। হাঁটতে হাঁটতেই আলাপচারিতা। হাতের মোবাইল নাড়াচাড়া করতে দেখে চিলাভার্ট বললেন, ‘ওহ, তুমি ছবি তুলবে? ওকে। আবার নিজেই স্টেডিয়াম দেখিয়ে বললেন, একটু সামনে গিয়ে তুললে ভালো হবে।’
লুঝনিকি স্টেডিয়ামের সামনে এসে আমার মোবাইল নিয়ে নিজেই সেলফি তুলতে চাইলেন। ক্লিক ক্লিক কয়েকবার। তার কয়েকটি সিঙ্গেল ছবিও তুললাম। করলাম দুটো ভিডিও। চিলাভার্টের ব্যবহার অমায়িক। ছবি তুলতে অনীহা নেই, নেই কথা বলতেও।
Advertisement
হাঁটতে হাঁটতেই জানতে চাওয়া ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়ার ফাইনাল নিয়ে কি ভাবছেন ১৯৯৮ বিশ্বকাপের আলোচিত এ গোলরক্ষক। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনায় কোনো দলকেই এগিয়ে রাখলেন না প্যারাগুয়ের জার্সি গায়ে ৭৪ ম্যাচ খেলে ৮ গোল করা চিলাভার্ট। পেশাদার ক্যারিয়ারে যার গোল আছে ৬৭টি।
ফাইনালে কোনো দলকে এগিয়ে না রাখলেও দুই দলের গোলরক্ষকের মধ্যে ফ্রান্সের হুগো লরিসকে বেশ এগিয়ে রাখলেন চিলাভার্ট। ‘ম্যাচটি হবে ফিফটি। যে কোনো দলই চ্যাম্পিয়ন হতে পারে। দুই দলই সে যোগ্যতা দেখিয়ে ফাইনালে উঠেছে। তবে ফাইনালে গোলরক্ষক হতে পারে ভাগ্য নির্ধারক’- বলছিলেন তিনি।
ফ্রান্সের গোলরক্ষক হুগো লরিসকে কেন এগিয়ে রাখছেন? ‘পোস্টের নিচে ওর মুভমেন্ট দুর্দান্ত। ফ্রান্স যে ফাইনাল পর্যন্ত এসেছে, তাতে ওর ভূমিকা অনেক। গোলপোস্ট সামলাচ্ছে, দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ড্যানিয়েল সুবাসিচও ভালো করেছে। তবে আমি নম্বর বেশি দেবো লরিসকেই’- বলেন ৫২ বছর বয়সী এ কিংবদন্তি গোলরক্ষক।
আরআই/এমএমআর/জেআইএম
Advertisement