চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার থানার বাদুরতলা জঙ্গিশাহ মাজার এলাকায় এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ডিবি পরিচয়ে যুবকরা ঘরে ঢুকে ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ এসেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ বখাটেকে আটক করেছে পুলিশ।
Advertisement
ছাত্রীর বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে জঙ্গিশাহ মাজার এলাকায় চর্তুথ তলায় ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। মেয়েটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাতভর অভিযানে পাঁচজনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছে চকবাজার থানা পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলো- চকবাজারের বাদুরতলা জঙ্গিশাহ বাড়ির মৃত ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুর রহমান চৌধুরীর ছেলে মো. মহিউদ্দীন (২২), বাদুরতলার মুন্সেফ আলী বাড়ির মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাইমুন ইসলাম সাকিব (২২), বাদুরতলা জঙ্গিশাহ বাড়ির মৃত আবু নাছেরের ছেলে আসিফ ইকবাল (২৫), চান্দগাঁও থানার বারইপাড়া ছত্তার মেম্বারের বাড়ির মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে রাজবির হোসেন নয়ন (২২) এবং একই এলাকার হাজী রমজান আলীর বাড়ির আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোশারফ হোসেন আকাশ (২২)। পুলিশ আরও জানায়, গ্রেফতার হওয়া পাঁচজনই ধর্ষণ মামলার আসামি। তবে আরেক আসামি আহমেদ সেহেজাদ তারেক (২২) ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, কলেজে পড়ার পাশাপাশি বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন মেয়েটি। তাই তিনি জঙ্গিশাহ মাজার এলাকায় ভাড়া থাকতেন। সঙ্গে তার আরেক বান্ধবী থাকতো। এক শিক্ষক ওই ছাত্রীর বাসায় এসে বিসিএস পরীক্ষার জন্য গণিতের প্রাইভেট পড়ান। এ নিয়ে এলাকার কিছু বখাটে তাকে ও তার বান্ধবীকে বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করত। বখাটেদের উৎপাতে বিরক্ত ওই ছাত্রী বৃহস্পতিবার বিকেলে বিষয়টি অবহিত করার জন্য তার এক বন্ধু মুনতাসির ফরহাদ (২৪) কে বাসায় আসতে বলে। এ সময় ছাত্রীটির শিক্ষক এস এম মনছুরুল হকও (২৯) বাসায় আসেন। তারা চারজন মিলে পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এরই এক সময় রাত ৮টা ১০ মিনিটের দিকে কয়েকজন যুবক এসে নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে তাদের বাসার দরজা ধাক্কাতে থাকে। এরপর দরজা খুলে দেয়া হলে বখাটে যুবকরা ছাত্রীর প্রাইভেট শিক্ষক ও বন্ধুকে মারধর করে পাশের রুমে আটকে রাখে। বাদীনি ও তার বান্ধবীকে সামনের রুমে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। ওই যুবকদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ৪ লাখ টাকা দাবি করে। বাদীনি টাকা দেয়ার অপারগতা প্রকাশ করলে ওই যুবকদের মধ্যে তারেক নামে একজন কলেজ ছাত্রীটিকে তার ওড়না দিয়ে দুই হাত বেঁধে শ্লীলতাহানি করে এবং পরে সাকিব নামে আরেকজন মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষণের ওই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়। পরে ধর্ষক ও তার সহযোগীরা বাসায় থাকা ৫টি মোবাইল ফোন একটি ল্যাপটপসহ নগদ ১০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। চকবাজার থানার ওসি আবুল কালাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘গতকাল রাতে এক ছাত্রী কয়েকজন বখাটে যুবকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগ পেয়েই ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠাই। ঘটনার বিষয়টি যাচাই করে রাতভর অভিযানে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার আরেক আসামি এখনও পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারদের আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এমআরএম/পিআর
Advertisement