আন্তর্জাতিক

গুহায় উদ্ধারে অংশ নেয়া নেভি সিল পেলো জলসিক্ত অভ্যর্থনা

থ্যাইল্যান্ডের থ্যাম লুয়াং গুহায় উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া রয়্যাল থাই নেভি ও থাই নেভি সিলের সদস্যদের জলসিক্ত অভ্যর্থনা দেয়া হয়েছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলের চিয়াং রাই প্রদেশের ওই গুহায় আটকে পড়া থাই কিশোর ফুটবল দলের ১২ সদস্য ও তাদের কোচকে উদ্ধারের একদিন পর বৃহস্পতিবার ইউ-তাপাও বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাদের এ অভ্যর্থনা দেয়া হয়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার থাই নেভি সিলের ১২৭ সদস্য ও নৌবাহিনীর অন্য ৩০ কর্মকর্তাকে বহনকারী সামরিক বিমান সি-১৩০ চিয়াং রাইয়ের মায়ে ফাহ লুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউ তাপাও বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এসময় বিমানবন্দরের অগ্নিনির্বাপক ইঞ্জিন থেকে বিমানটিতে পানি ছিটিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়।

পরে থাই নৌবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বহনকারী ইএমবি-১৩৫ বিমান চিয়াং রাই থেকে মায়ে ফাহ বিমানবন্দরে পৌঁছায়। চিয়াং রাইয়ের মায়ে সাই জেলার থ্যাম লুয়াং গুহায় আটকা পড়া উইল্ড বোর ফুটবল দলের ১২ সদস্য ও তাদের কোচকে উদ্ধারে অংশ নিয়েছিলেন এই কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন : অসম্ভব এক মিশনের সফলতার গল্প

Advertisement

বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের স্বাগত জানান। থাই নেভি সিলের প্রথম দলটি গত ২৫ জুন উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। ২৩ জুন থাই কিশোররা গুহার ভেতরে প্রবেশের পর নিখোঁজের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এই সদস্যরা সেখানে অভিযানে যায়। পরে নেভি সিলের অন্যান্য সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

রয়্যাল থাই ফ্লিটের কমান্ডার র‌্যাংসারিত সত্তায়ানুকুল রয়্যাল নেভি ও নেভি সিলের সদস্যদের প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে উদ্ধার অভিযানের সময় অক্সিজেন সঙ্কটে প্রাণ হারানো নেভি সিলের সাবেক কর্মকর্তা সামান গুনানের আত্মত্যাগের প্রশংসা ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

র‌্যাংসারিত সত্তায়ানুকুল বলেন, আমি আপনাদের সবেইকে নিয়ে গর্বিত।

এদিকে, উদ্ধার মিশনের প্রধান ও চিয়াং রাই প্রদেশের গভর্নর ন্যারংস্যাক ওসোত্তানাকর্ন বলেছেন, থ্যাম লুয়াং গুহাকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে। নাটকীয় উদ্ধারের সময় উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের ব্যবহৃত কাপড়, অন্যান্য সরঞ্জাম সেখানে প্রদর্শিত হবে। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস, এটা থাইল্যান্ডের অপর একটি পর্যটন কেন্দ্র হবে। পর্যটকরা এটি দেখতে আসবেন।

Advertisement

গুহা থেকে থাই কিশোরদের উদ্ধারের ঘটনায় দেশটিতে এখনো আনন্দের আমেজ চলছে। উইল্ড বোর ফুটবল দলের ১২ সদস্য ও ২৫ বছর বয়সী কোচ বর্তমানে চিয়াং রাই প্রদেশের প্রধান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আরও পড়ুন : রাষ্ট্র পরিচয়হীন পাঁচ লাখ মানুষের ‘নায়ক’ একাপ্পল

গত ২৩ জুন থেকে গুহায় উইল্ড বোর ফুটবল দলের ১২ কিশোর সদস্য ও তাদের কোচ আটকা ছিলেন। ২ জুলাই ৯ দিনের এক অভিযানের পর দুই ব্রিটিশ ডুবুরি গুহার ভেতরে কিশোর ফুটবল দলের সদস্যদের খুঁজে বের করেন। দীর্ঘ প্রায় ৪ কিলোমিটার সংকীর্ণ ও উঁচু-নিচু জলমগ্ন পথ পাড়ি দিয়ে কিশোরদের উদ্ধারে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান শুরু হয় রোববার।

প্রথম দিকে থাই কর্তৃপক্ষ জানায়, গুহায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় ও বর্ষা মৌসুমে বর্ষণের কারণে তাদের এখনই উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। আগামী ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের উদ্ধারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

কিন্তু রোববার নাটকীয়ভাবে বন্যার পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় এবং বর্ষণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর উদ্ধার মিশনের প্রধান ও চিয়াং রাই প্রদেশের গভর্নর ন্যারংস্যাক ওসোত্তানাকর্ন জানান, কিশোরদের উদ্ধারে এখনই উপযুক্ত সময়। রোববার প্রথম দফায় চারজন ও সোমবার দ্বিতীয় দফায় চারজনকে উদ্ধার করা হয়। কোচসহ বাকি চারজনকে মঙ্গলবার বের করে আনেন উদ্ধারকারীরা।

সূত্র : এএফপি, ব্যাংকক পোস্ট।

এসআইএস/জেআইএম