জাতীয়

বিমানকে ২০ আগস্ট ড্রিমলাইনার ডেলিভারি দেবে বোয়িং

২০ আগস্ট বোয়িং কোম্পানি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে বুঝিয়ে দেবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ড্রিমলাইনার আকাশবীণা। এর পরেরটি আসবে নভেম্বরে। পরবর্তী বছরে আসছে আরও দুইটি উড়োজাহাজ। আকাশবীণা, হংসবলাকা, গাঙচিল ও রাজহংস নামে ডাকা হবে তাদের।

Advertisement

আগস্ট থেকে বহরে যুক্ত হওয়া জ্বালানি সাশ্রয়ী অত্যাধুনিক এসব উড়োজাহাজ যুক্ত হলে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাবে নতুন গতি।

জাহাজগুলো যুক্ত হওয়ার পর নতুন রুট এবং ইউরোপসহ দূরপাল্লার বন্ধ হয়ে যাওয়া রুটগুলো চালু করার পরিকল্পনার আভাস দিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস বিভাগের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আশরাফুল আলম।

তিনি বলেন, শুধু মার্কেটিং নয়, বিমানের বহরে নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত হলে সার্বিক দিক ও বিভাগে গতির সঞ্চার হবে। চারটি ড্রিমলাইনার বহরে যুক্ত হওয়ার পর যাত্রীসেবায় পরিবর্তন আসবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, শিডিউল বিপর্যয়ের মতো ঘটনা কমবে।

Advertisement

এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক পরিচালনা পর্ষদ সদস্য কাজী ওয়াহিদুল হক বলেন, বিমানের ব্যবস্থাপনায় দক্ষ জনবল প্রয়োজন। অতীতের অব্যবস্থাপনা বিমানকে লোকসানে নিয়ে যায়। ওই বিষয়গুলো মাথায় রেখে পরিকল্পনা করতে হবে।

১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি একটি ডিসি-৩ উড়োজাহাজ নিয়ে যাত্রা করে বাংলাদেশ বিমান। সেটি পরীক্ষামূলক ওড়ার সময় বিধ্বস্ত হয়। এক মাস পর ভারত ও হল্যান্ড সরকারের উপহারে বিমান বহরে যুক্ত হয় চারটি ফকার এফ ২৭ উড়োজাহাজ। ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া একটি বোয়িং ৭০৭ চার্টার্ড উড়োজাহাজ ১৭৯ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা নামে।

শুরু হয় বিমানের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা। এর ঠিক তিনদিন পর ৭ মার্চ শুরু হয় অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট। ১৯৭৩ সালে আটটি ফকার ও দুটি বোয়িং নিয়ে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ায় ১০টিতে। এক সময় এই ১০টি উড়োজাহাজ নিয়ে বিশ্বের তিনটি মহাদেশের ২৯টি শহরে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে বিমান।

১৯৭৮-৭৯ অর্থবছরে প্রথম মুনাফা অর্জন করে বাংলাদেশ বিমান। এরপর বেশ কয়েকবার লাভের মুখ দেখেছে বিমান। কিন্তু বাড়েনি উড়োজাহাজের সংখ্যা। তবে লিজে নেয়া উড়োজাহাজের সংখ্যা বেড়েছে বিমানবহরে। ২০০৭ সালের ২৩ জুলাই পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ বিমান।

Advertisement

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হলেও টানা লোকসানের বোঝা বয়ে বেড়াতে হয় বিমানকে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২১৫ কোটি টাকা লোকসান, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে লোকসান বেড়ে দাঁড়ায় ৩১৪ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বিমান।

এ বছরে লোকসান কাটিয়ে ৪৭ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করে বিমান। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৩৫ কোটি টাকা লাভ করে বিমান। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মুনাফার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩২৪ কোটি টাকা। ক্ষতি কাটিয়ে আটটি অভ্যন্তরীণ এবং ১৫টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান। বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানবহরে মোট উড়োজাহাজ আছে ১২টি। এর মধ্যে নিজস্ব ছয়টি এবং লিজ ছয়টি। বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর রয়েছে চারটি, বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর রয়েছে দুটি, বোয়িং ৭৩৭-৮০০ আছে চারটি এবং ড্যাস ৮ উড়োজাহাজ আছে দুটি। বিমানে বর্তমানে স্থায়ী জনবল রয়েছে ২ হাজার ৯৭৩ জন এবং অস্থায়ী জনবল রয়েছে ১ হাজার ৮০৭ জন।

আরএম/এমআরএম/পিআর