নুনো গোমেজের ভলিটা বুকে থামিয়ে ডান পায়ে অসাধারণ ব্যাকভলি করলেন কাফু। বল জালে। মস্কোর রেড স্কয়ারে বিশ্বকাপ উপলক্ষে তৈরি ফুটবল পার্কে তখন কাফু.. কাফু... আওয়াজ। পরক্ষণেই দিয়েগো ফোরলান মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে এক দৌড়ে গোল ফিরিয়ে দিলেন কাফুদের জালে। পরাস্ত হলেন মেক্সিকোর সেই সুদর্শন গোলরক্ষক জর্জ ক্যাম্পস। পরক্ষণেই লোথার ম্যাথিউজের খুব কাছ থেকে নেয়া একটি শট দর্শনীয়ভাবে ফেরালেন ক্যাম্পস। অস্থায়ীভাবে নির্মিত গ্যালারিতে দর্শকরা তাকে সম্মান জানালেন মেক্সিকান ঢেউ তুলে।
Advertisement
লিজেন্ডারি ফুটবলার আর রাশিয়ান সাবেক তারকাদের নিয়ে রেড স্কয়ারের বিশেষ এই ম্যাচ আয়োজন করেছিল ফিফা। ৪০ মিনিটের সিক্স-এ সাইড ম্যাচটি ড্র হয়েছে ৯-৯ গোলে। ২০১০ বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল জয়ী উরুগুয়ের দিয়েগো ফোরলান একাই করলেন ৬ গোল। ম্যাচের পর তাকেই ঘোষণা করা হলো সেরা খেলোয়াড় হিসেবে। কাফু, ম্যাথিউজরা তাকে অভিনন্দন জানালেন।
ব্রাজিলের কাফু, জার্মানির লোথার ম্যাথিউজ, পর্তুগালের নুনো গোমেজ, মেক্সিকোর জর্জ ক্যাম্পস, আর্জেন্টিনার পাভলো সোরিন এবং রাশিয়ান নারী দলের স্ট্রাইকার মার্টিনা ফোরেভা। প্রতিপক্ষ দলে ফোরলান ছাড়া ছিলেন রাশিয়ান আন্দ্রে থিকভ, স্পেনের মিগুয়েল ফার্নান্দেজ, কলম্বিয়ান হুয়ান পাবলো, সাবেক সুইস গোলরক্ষক যুবারবুইয়ার ও রাশিয়ান নারী ফুটবলার আলেক্সি স্মেরটিন।
বিরতির আগ পর্যন্ত এগিয়ে ছিল ফোরলানদের দল। বিরতির পর গোল পাল্টা গোলে ম্যাচ সমতা ৯-৯ এ। অতীতে আলো ছড়ানো এই কিংবদন্তী ফুটবলাররা যে এখনো নিজেদের খেলা ধরে রেখেছেন তা না দেখলে বোঝার উপায় ছিল না মোটেও। স্কিল, ফিটনেস- সব দিকেই তারা দুর্দান্ত।
Advertisement
প্রদর্শনি ম্যাচ হলেও খেলায় তারা ছিলেস সিরিয়াস। ফাউল, হ্যান্ডবলের দাবিগুলো করলেন জোরালোভাবেই। একবার তো নুনো গোমেজ রেফারির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান রেফারি (ভার) চাইলেন হাতের ইশারায়। রেফারি নাকচ করে দিলে কি যে বিরক্তি গোমেজের! রেফারি আবার একটু শাসিয়েও এলেন তাকে।
ব্রাজিলের কাফু ও আর্জেন্টিনার সোরিন এক জার্সি গায়ে খেললেন। একবার তো নিজেদের সীমানা থেকে হেডে হেডে দুই জনে বল নিয়ে গেলেন ফোরলানের সীমানায়। মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে ধারাভাষ্যকাররা বলতে থাকলেন ‘ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা কম্বিনেশন।’
রাশিয়ান ফুটবলাররা বল ধরলেই গগনবিদারি আওয়াজ ‘রাশিয়া.. রাশিয়া...’। কাফুর পায়ে বল গেলে কাফু.. কাফু...। দিয়েগোতে বল নিয়ে কাফুদের সীমানায় যাওয়া মানেই গোল। তখন আওয়াজ উঠে ‘দিয়েগো... দিয়েগো...।’
ব্রাজিলের দুইবার বিশ্বজয়ী দলের সস্য কাফু, জার্মানির ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক লোথার ম্যাথিউজ আর পর্তুগালর নুনো গোমেজরা ৪০ মিনিটের ম্যাচে তারে সোনালী অতীতকেই মনে করিয়ে দিলেন মস্কোর রেড স্কয়ারে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষকে।
Advertisement
আরআই/আইএইচএস/এমএস