নীলফামারীতে এক মুসলিম তরুণকে বিয়ে করার অপরাধে লক্ষ্মী রানী রায় নামের এক তরুণীর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
Advertisement
মঙ্গলবার ভোরে নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বিশমুড়ি চাঁদের হাট কলেজ পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী তরুণী ওই এলাকার মৃত বীরেন্দ্র নাথ রায়ের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর ধরে জেলা শহরের একটি কোম্পানিতে চাকরি করে লক্ষ্মী রানী। চাকরির সুবাদে রবিউল নামের এক তরুণের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার।
গত সোমবার (০২ জুলাই) নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে রবিউল ইসলামকে বিয়ে করেন লক্ষ্মী রানী। ওইদিন রবিউলের বাড়িতে চলে যান রানী। রবিউল সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের দুহুলী গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
Advertisement
তরুণী বলেন, সোমবার (০৯ জুলাই) রাতে আমার গ্রামের মাতব্বররা বিয়ের ঘটনাটি জানতে পারে। পরে রবিউলের বাড়ি থেকে আমাকে ধরে নিয়ে আসে তারা।
এরপর সালিশের মাধ্যমে মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় মাতব্বর সদানন্দ রায়, দীনবন্ধু রায় ও পুস্প কুমার রায় আমার শ্লীলতাহানি করে। পরে মাথার চুল ন্যাড়া করে আমার শরীরের বিকৃতি ঘটায়। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমার পরিবারকে ও আমাকে সমাজচ্যুত করার হুমকি দেয় তারা।
লক্ষ্মী রানীর মা বুলো বালা রায় বলেন, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। এর মধ্যে লক্ষ্মী রানী দ্বিতীয়। সে সংসারের একমাত্র ভরসা। সামান্য ভুলের কারণে আজ আমার মেয়েকে এভাবে লাঞ্ছিত করা হলো। আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাতব্বর সদানন্দ রায় ও দীনুবন্ধু রায় বলেন, আমরা লক্ষ্মী রানীকে শুদ্ধি করার জন্য ধর্মীয় শাস্ত্রমতে ন্যাড়া করে সমাজভুক্ত করেছি। সে ধর্মান্তরিত হয়ে আমাদের কলঙ্কিত করেছে। সে ধর্মের অবমাননা করেছে। তাই তাকে ন্যাড়া করে শুদ্ধি করেছি।
Advertisement
এ ব্যাপারে নীলফামারী শহরের শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালীমন্দিরের পুরোহিত আশোক কুমার ভুট্টাচার্য বলেন, মাথা ন্যাড়া করে কাউকে শুদ্ধি করার বিধান নাই। তারা কাজটি ঠিক করেনি।
নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ওসি বাবুল আকতার বলেন, এ ঘটনায় এখনও অভিযোগ পাইনি। তরুণী বা তার পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাহেদুল ইসলাম/এএম/এমএস