দেশজুড়ে

টাঙ্গাইলে বাজারে সবজির দাম চড়া, দিশেহারা ক্রেতা

টাঙ্গাইল শহরের কাঁচা বাজারগুলোতে হঠাৎ করে নিত্য প্রয়োজনীয় শাক-সবজির দাম বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে ৪০ টাকা কেজি দরের কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। এছাড়া শাক-সবজি ও কাঁচা মরিচ একেক বাজারে ভিন্ন ভিন্ন দাম লক্ষ্য করা গেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে কাঁচা মরিচসহ সবজির খেতে পানি জমে থাকায় বাজারে আমদানি কম হওয়ায় দাম বৃদ্ধির কারণ বলছে ক্রেতারা। তবে এ বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট জড়িত বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ক্রেতাদের। বাজার নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা।

Advertisement

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের পার্ক বাজার, বটতলা বাজার, ছয়আনী বাজার, সাবালিয়া বাজার, বৈল্যা বাজার, আমিন বাজারের দুইদিন আগেও কাঁচা মরিচ কেজি ছিল ৩০-৪০ টাকা, বর্তমানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৬০ টাকায়। বর্তমানে প্রতি কেজি করলা ৪০-৪৬ টাকা, পটল ৩৬-৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০-৪৪ টাকা, কাকরোল ৩২-৪০ টাকা, বেগুন ৪০-৪৮ টাকা, ঝিঙা ৪২-৪৪ টাকা, শশা (দেশি) ৬০-৮০ টাকা, শশা (হাইব্রিড) ৪৬-৫০ টাকা, পেঁপে ৩৬-৩৮ টাকা, মিষ্টি কুমড়া (মাঝারি) ৬০-৭৫ টাকা, চালকুমড়া (মাঝারি) ১৫-২৫ টাকা, লাল শাক প্রতি কেজি ৩৬-৪০ টাকা, পুঁই শাক ৪০-৪৪ টাকা, লাউ শাক প্রতি আটি ২৫-৩০ টাকা, গোলআলু প্রতি কেজি ২৫-৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার পার্কবাজারে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায় একই মরিচ বটতলা ও সাবালিয়া বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৪০-১৬০ টাকা। বৈল্যা বাজরের ৩২-৩৪ টাকার পটল ছয়আনী বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৪০ টাকা। বিভিন্ন বাজারে এ রকম নানা পণ্যের ভিন্ন ভিন্ন দাম লক্ষ্য করা গেছে।

পার্ক বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা শাহজাহান জানান, শহরের পার্ক বাজারে সাধারণত পাইকারি হারে পণ্য বিক্রি করা হয় সে জন্য দাম কিছুটা কম থাকে। বেশির ভাগ খুচরা বিক্রেতারা পার্কবাজার থেকে শাক-সবজি কিনে শহরের বিভিন্ন বাজারে চাহিদা অনুযায়ী কম-বেশি দাম নির্ধারণ করে বিক্রি করেন। এ জন্যই বিভিন্ন বাজারে শাক-সবজির দাম কিছুটা কম-বেশি হয়ে থাকে।

ছয়আনী ও সাবালিয়া বাজারের নিয়মিত ক্রেতা নিপা খান, শিক্ষক হুরমুজ আলী জানান, গত দু’দিনের তুলনায় কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ করে কয়েকগুণ বেড়েছে। এতে আধা কেজির স্থলে তারা ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ কিনেছেন। শাক-সবজির দামও হঠাৎ করেই প্রতি কেজিতে ৫-২০ টাকা বেড়েছে।

Advertisement

এ দিকে অধিকাংশ ক্রেতা মনে করেন জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের মাছ-মাংসের বাজারের ন্যায় শাক-সবজি বাজারগুলোতেও মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলে বাজার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

পার্ক বাজারের সবজি বিক্রিতা কৃষক আব্দুল মান্নান ও হায়াত আলী জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও নিচু জমিতে বর্ষার পানি ঢুকে পড়ায় আবাদের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। পারি জমে কাঁচা মরিচের খেতে গাছের গোড়ায় পঁচন ধরেছে মরিচ ধরছে না। এ জন্য যা আছে তাই বাজারে বিক্রি করে নতুন আবাদের চেষ্টা করছেন।

বটতলা কাঁচা বাজারের শাক-সবজি বিক্রেতা মো. হানিফ উদ্দিনসহ অনেকেই জানান, টাঙ্গাইল শহরের আশ-পাশের এলাকায় প্রচুর শাক-সবজি উৎপাদন হয়। কৃষকরা উৎপাদিত শাক-সবজি পার্ক বাজারে এনে পাইকারি বিক্রি করেন। সেখান থেকে কিনে এনে শহরের ছোট ছোট বাজারগুলোতে সকাল-বিকেল বিক্রি করা হয়। গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও নিচু জমিতে বর্ষার পানি ঢুকে শাক-সবজি আবাদ প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাজারে আমদানি কম হওয়ায় বাজার দর কিছুটা বেড়েছে। তবে তারা মনে করেন দাম বৃদ্ধিটা সাময়িক বৃষ্টি থেমে গেলে খুব তাড়াতাড়িই দাম কমে স্বাভাবিক হবে।

আরিফ উর রহমান টগর/আরএ/আরআইপি

Advertisement