সম্প্রতি বাংলাদেশের অংশ হওয়া ছিটমহলগুলোর অধিবাসীদের ভোটার করার জন্য সব ধরনের প্রস্ততি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সরকারের উচ্চপর্যায়ের পরামর্শের ভিত্তিতে ছিটমহলবাসীদের দ্রুত ভোটার করার পদক্ষেপ নিয়েছে ইসি। ছিলমহলগুলোতে সীমানা নির্ধারণ করা হলেই তাদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। দেশব্যাপী চলমান হালনাগাদে ছিটমহলবাসীদের ভোটার তালিকায় যুক্ত করা হবে। আর এর মাধ্যমে দীর্ঘ ২৫ বছর ভোটার না হওয়ার দুঃখ দূর হবে তাদের । ইসির একাধিক সূত্র জানায়, কমিশনের নির্দেশে ছিলমহলবাসীর ভোটার করার বিষয়ে একটি ফাইল তৈরি করা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করে তা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানানো হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশমন সচিব সিরাজুল ইসলাম বুধবার জাগো নিউজকে বলেন, চলমান ভোটার তালিকার সময়ই ছিটমহলবাসীদের ভোটার করা হবে। এজন্য দ্রুত কাজ করছে ইসি। জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৫ মে শুরু হওয়া ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের ভোটার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছি। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯০ সালে ৪০ হাজার ছিটমহলবাসীর নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর যতবারই ভোটার তালিকা তৈরি হয়েছে ততবারই আইনি জটিলতার কারণে তাদের ভোটার করা হয়নি।ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ছিটমহলে প্রবেশের ক্ষেত্রে শিথিলতা থাকায় সর্বশেষ ১৯৯০ সালে ছিটমহলবাসীকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ওই সময় ৩৩টি ছিটমহলের বাসিন্দাকে ভোটার তালিকার নাম নিবন্ধন সম্ভব হয় । এর মধ্যে কুড়িগ্রামের ১৮টি, পঞ্চগড়ের ১১টি এবং লালমনিরহাটের ৪টি ছিটমহল ছিল। এসব ছিটমহলের ভোটার সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ হাজার। দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকায় এ ছিটমহলে প্রবেশের কোনো বাধা না থাকায় তাদের হালনাগাদ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০০৭ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে ছিটমহলবাসীকে ভোটার করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এরপর ২০১২ সালের ১০ মার্চ ভোটার তালিকার হালনাগাদ কার্যক্রমে তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছিল ইসি। এর অংশ হিসেবে এপ্রিল মাসে ছিটমহলগুলোয় প্রবেশে ভারত সরকারের অনুমতির জন্য পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি দেয় কমিশন। এ ছাড়া কমিশন থেকে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।তৎকালীন কমিশনের চিঠির জবাবে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয় ছিটমহলের বিনিময় বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ছিটমহল বিনিময় নিষ্পত্তি হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটারদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। ছিটমহল বিনিময় প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি না হওয়ায় সেই সময় সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা ভোটার হতে পারেনি।ইসির উপ-সচিব আবদুল ওদুদ জানান, নানা জটিলতায় এতদিন ছিটমহলবাসীকে ভোটার করা সম্ভব হয়নি। এখন ছিটমহল বিনিময় হওয়ায় সেখানে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করা হবে। এজন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন। যাতে দ্রুততর সময়ের মধ্যে ছিটমহলবাসীকে ভোটার করা যায়।এইচএস/এআরএস/পিআর
Advertisement