ধর্ম

ওজুর সময় প্রত্যেক অঙ্গ কতবার ধোবেন?

ওজু নামাজের চাবি। নামাজ বেহেশতের চাবি। নামাজসহ অনেক ফরজ ইবাদতের জন্য ওজু করা আবশ্যক। ওজু ব্যতিত নামাজ হবে না। এ কারণেই ওজুকে নামাজের চাবি বলা হয়েছে।

Advertisement

ওজুর সময় প্রত্যেক অঙ্গ কতবার ধোবেন? হাদিসে পাকে ওজুর অঙ্গগুলো ধোয়া সম্পর্কে ৩টি মতই রয়েছে। ওজুর অঙ্গগুলো ধোয়া সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বর্ণিত হাদিসগুলো তুলে ধরা হলো-

একবার- হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওজুর প্রতিটি অঙ্গ একবার করে ধুয়েছেন।’ (ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, বুখারি)

দুইবার - হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওজুর প্রতিটি অঙ্গ দুইবার ধুয়েছেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

Advertisement

তিনবারহজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওজুর প্রত্যেক অঙ্গ তিনবার করে ধুয়েছেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

অন্য এক বর্ণনায় হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওজুর প্রতিটি অঙ্গ তিনবার করে ধুয়েছেন।

ওজুর অঙ্গগুলো কত ধুবেন? এ হাদিসগুলোর মধ্যে হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসটি বেশি বিশুদ্ধ এবং অধিক উত্তম। এ কারণে ওলামায়ে কেরামগণের মতামত হলো-

- ওজুর অঙ্গগুলো একবার ধুলেও ওজু হয়ে যাবে; কিন্তু- ওজুর অঙ্গগুলো দুইবার ধোয়া ভালো। আর- ওজুর অঙ্গগুলো তিনবার ধোয়া অধিকতর উত্তম।

Advertisement

তবে ওজুর অঙ্গগুলো তিনবারের বেশি ধোয়াতে কোনো উপকার নেই।

আরও পড়ুন > যে কাজে কখনো অভাব দূর হবে না

হজরত ইবনে মোবারক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘যে ব্যক্তি ওজুর অঙ্গগুলো তিনবারের বেশি ধোয়; আমার ধারণা মতে তার গোনাহ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

হজরত আহমদ ও ইসহাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহিমা বলেন, ‘যে ব্যক্তি অনিশ্চয়তায় (সন্দেহে) পরে যায়; সে তিনবারের বেশি ধুতে পারবে।’

পরিশেষে…রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওজু কেমন ছিল তা হজরত আলি রাদিয়াল্লাহুর দিক-নির্দেশনায় তুলে ধরছি-

হজরত আবু হাইয়্যা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, আমি হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ওজু করতে দেখেছি। (তা হলো)-

- তিনি উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুলেন এবং ভালোভাবে পরিষ্কার করলেন;- তিনবার কুলি করলেন;- তিনবার নাকে পানি দিলেন;- তিনবার মুখমণ্ডল ধুলেন;- তিনবার করে উভয় হাত কনুই পর্যন্ত ধুলেন;- একবার মাথা মাসেহ করলেন; এবং- উভয় পা গোছা (টাখনু) পর্যন্ত ধুলেন।

এরপর তিনি দাঁড়ালেন এবং ওজুর অবশিষ্ট পানি তুলে নিয়ে তা দাঁড়ানো অবস্থায় পান করলেন। অতঃপর তিনি বললেন-

‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওজু কিরূপ ছিল তা তোমাদের দেখানোর জন্যই আমি এরূপ করলাম।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ এবং বুখারিতে সংক্ষেপিত)

সুতরাং ওজুর ক্ষেত্রে যেহেতু ৩ বার অঙ্গগুলো ধোয়া অধিকতার উত্তম; তাই প্রত্যেক অঙ্গ তিনবার ধোয়াই উচিত।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ওজু সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত নিয়মে ওজু করার তাওফিক দান করুন। আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু নির্দেশিত পন্থায় বিশ্বনবির ওজুর পদ্ধতি বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর