দেশজুড়ে

অবহেলায় পাবনা-রাজবাড়ীর জৌকুড়া নৌ-রুট

নৌপথে রাজবাড়ীর সঙ্গে পাবনার যোগাযোগের অন্যতম একটি রুট হচ্ছে রাজবাড়ীর জৌকুড়া ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ নৌ-রুট। বর্তমান সরকার দেশের প্রতিটি নৌ-রুটে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলেও দীর্ঘদিন যাবৎ অবহেলিত এ রুট। তাই যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ফেরি ও লঞ্চ বাড়ানোর দাবি উঠেছে এ ঘাটে।

Advertisement

এ রুটে দু’টি ইউটিলিটি ফেরি ও দু’টি লঞ্চের মাধ্যমে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার হয়। কিন্তু ঘাটের অ্যাপ্রোচ সড়ক, পন্টুন এবং লঞ্চ ও ফেরি সবকিছুর অবস্থা একেবারে নাজুক। পন্টুনে কর্মরত শ্রমিক ও যাত্রীদের বিশ্রাম এবং বাথরুমের কোনো ব্যবস্থা নেই। রোদ-বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নিচেই সবাইকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। শুধুমাত্র টিনের ছাপড়ার খুপরি ঘরে টিকিট বিক্রির জন্য ঘাট ইজারদারদের কয়েকজন বসে থাকেন।

জানা গেছে, রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ধাওয়াপাড়ার জৌকুড়া ফেরি ঘাট। ইজারাদারদের নিয়ন্ত্রণে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল করে। এর পাশাপাশি ১০টি ট্রলার ঘণ্টা হিসাব করে যাত্রী পারাপার করে। দীর্ঘদিন এ রুটে নতুন কোনো ফেরি বা লঞ্চ আসেনি। এছাড়া ঘাট কর্তৃপক্ষ যাত্রী পারাপারে ফেরি ও লঞ্চ চলাচলে কোনো সময়সীমাও মানেন না।

ফেরি চলাচলের সময় সকাল ৮টা, ৯টা, দুপুর সাড়ে ১২টা, আড়াইটা ও রাত ৯টা। এছাড়া এ রুটে নির্দিষ্ট কিছু যাত্রীবাহী বাস,পণ্যবাহী ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য যানবাহন পারাপার হয়। ফেরি কম হওয়ায় অনেক সময় জৌকুড়া ঘাট এলাকায় যানবাহন ও যাত্রীরা দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকেন। ঘাটে কমকর্তা-কর্মচারী ও যাত্রীদের জন্য কোনো বিশ্রামগার ও বাথরুমের ব্যবস্থাও নেই।

Advertisement

জৌকুড়া ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে চলাচলকারী যাত্রীরা জানান, নদীপথে পাবনার সঙ্গে রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়া যোগাযোগ খুবই সহজ। কিন্তু এ রুটে চলাচলকারী ফেরি ও লঞ্চ পুরাতন এবং ফিটনেসবিহীন। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা ফেরি ও লঞ্চে পারাপার হচ্ছেন। তারপরও সময় মতো ছাড়ে না নৌযান। এ রুটে যাত্রী ভাড়া কমানোসহ লঞ্চ ও ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি জানান তারা।

জৌকুড়া ঘাটের লঞ্চ মালিক পক্ষের ম্যানেজার আব্দুল লতিফ জানান, এ ঘাটে যাত্রীর সংখ্যা মোটামুটি। কিন্তু পুরাতন লঞ্চ হওয়ায় যাত্রীরা অনেক সময় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে চায় না। এ রুটে ভালো ও বড় লঞ্চ থাকলে তাদের ব্যবসা ভালো হতো ও যাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেত। এছাড়া নির্ধারিত ভাড়াই নেয়া হয়।

রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খাইরুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন জানান, জৌকুড়া ফেরি ঘাটটি রাজবাড়ীকে পাবনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করছে এবং এ ঘাট সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। বর্তমানে এ রুটে দু’টি ফেরি চলমান রয়েছে কিন্তু ফেরিগুলো পুরানো।

তিনি আরও বলেন, নতুন একটি ফেরির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। সরকারিভাবে ঘাটটি ইজারা দেয়া হয়েছে। ঘাটের অ্যাপ্রোচ সড়কটি তারা নিয়মিত মেরামত করেন এবং পন্টুনটি নদীর পানি উপর ভিত্তি করে ওঠানামা করান। কর্মচারী থাকার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপশি যাত্রীদের সাময়িক বিশ্রাম নেয়ার বিষয়েও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

Advertisement

রুবেলুর রহমান/এফএ/এমএস