জাতীয়

নাচের রিহার্সালে ঢামেকের পঞ্চাশোর্ধ্ব অধ্যাপকরা!

ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) পঞ্চাশোর্ধ্ব কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকা গত কয়েকদিন যাবত নাচের রিহার্সাল করছেন। তরুণ চিকিৎসকদের সঙ্গে জুটি বেঁধে তারা দ্বৈত নৃত্যু পরিবেশন করবেন। এমন খবরে অনেকেই হয়তো চমকে উঠে বলবেন , সত্যি নাকি আষাঢ়ে গল্প।

Advertisement

আগামী ১০ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ডিএমসি) ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ দিবসটিকে সামনে রেখে ওইদিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচতে সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা সত্যি সত্যিই রিহার্সালে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

এই দিবস উপলক্ষে ঢামেক ক্যাম্পাসে সাজসাজ রব। ঢামেক অ্যালামনাই ট্রাস্ট্রের সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসেসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিক-নির্দেশনায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানকে সফল ও সুন্দর করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ঢামেক অ্যালামনাই ট্রাস্ট্রের মহাসচিব ও ঢামেক ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. শফিকুল আলম চৌধুরী শামীম জানান, গত দুবছর ঈদের ছুটি ও অন্যান্য কিছু সমস্যার কারণে ১০ জুলাই ঢামেক দিবস পালন করা সম্ভব না হলেও এবার নির্ধারিত দিনে দিবসটি পালিত হবে। ওইদিন ক্যাম্পাসে শহীদ ডা. মিলন অডিটরিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক।

১০ জুলাই সকালে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হবে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ২০১৭-২০১৮ এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষায় মেধাতালিকায় থাকা আট শিক্ষার্থীকে দেয়া হবে বিশেষ কৃতিত্ব সম্মাননা। স্মৃতিচারণ, ফান ডিবেট, খেলাধুলা, দুপুরের খাবার ও বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে।

Advertisement

জানা গেছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রথমভাগে বাংলা জনপ্রিয় গানের তালে ঢামেকের সিনিয়র শিক্ষকরা তাদের সন্তান বয়সী ছাত্রীদের সঙ্গে এবং শিক্ষিকরা তাদের ছাত্রদের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করবেন। এ ছাড়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গান গাইবেন ও নাটকে অংশগ্রহণ করবেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ভাগে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদি সংগীত পরিবেশন করবেন। উল্লেখ্য, ১৯৪৬ সালের ১০ জুলাই যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশের প্রথম ও ঐতিহ্যবাহী এ মেডিকেল কলেজের। ঢাকার তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. মেজর ডাব্লিউ জে ভারজিন ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বয়ে গড়া কমিটির প্রস্তাবনা অনুসারে এ মেডিকেল কলেজ চালু হয়।

শুরুতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিজস্ব কোনো ভবন ছিল না। যে ভবনে প্রথম কলেজ চালু হয়, তা ১৯০৪ সালে স্থাপিত হয় পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের সচিবালয় হিসেবে। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলাও শুরু হয় এ ভবন থেকেই। একটি মাত্র ভবন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

কলেজ ও হাসপাতাল ভবন ছাড়াও ঢামেকে রয়েছে নিজস্ব মিলনায়তন, পরমাণু চিকিৎসাকেন্দ্রের জন্য আলাদা ভবন, চারতলাবিশিষ্ট আলাদা বার্ন ইউনিট, ছাত্রছাত্রীদের জন্য হোস্টেল ইত্যাদি। প্রতি বছর ১৮০ ছাত্রছাত্রী এ কলেজে ভর্তি হন এমবিবিএস কোর্সে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স (এমডি ও এমএস) চালু করা হয়েছে।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন এ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

Advertisement

এমইউ/জেডএ