খেলাধুলা

আরেকটি অঘটন ঘটাতে চায় রাশিয়া

বিশ্বকাপের শুরুর আগে মাত্র ৪ শতাংশ রাশিয়ান মানুষ বিশ্বাস করতো রাশিয়া গ্রুপ পর্ব পার হতে পারবে। কিন্তু সেখানে রাশিয়া এখন কোয়ার্টার ফাইনালে। ভাগ্যকে সঙ্গী করে দর্শক এবং নিজ ঘরে খেলার ফায়দা লুটে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নামার অপেক্ষায় রাশিয়ানরা।

Advertisement

দ্বিতীয় রাউন্ডে স্পেনকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দেওয়া রাশিয়া এবার আরো একটি অঘটনের স্বপ্ন দেখছে। আর্জেন্টিনাকে হারানো শক্তিশালী ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মত সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্নে বিভোড় পুরো রাশিয়া। অবশ্য, সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত থাকাকালীন সময়ে বিশ্বকাপের সেমিতে খেলেছিল তারা।

ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি তাদের কোচ চেরচেশভ। দীর্ঘকায় শরীরের বড় গোফওয়ালা মানুষটি মাঠে খুব শান্তশিষ্ট থাকেন। বিশ্বকাপ শুরুর আগে এই চেরচেশভই বলেছিলেন তিনি ভাগ্যের উপরেই তাকিয়ে রয়েছেন। ‘রাশিয়াতে এখন সবাই ভাগ্যে বিশ্বাস করে। সবাই আমাদের সাফল্য কামনা করছে।’

২৩ দিন পর এখন বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে রাশিয়ানরা। চেরচেশভ তার খেলোয়াড়দের নিজের সন্তানের মতো মনে করেন। বিশ্বের যেকোন ফুটবল দলের জন্য রাশিয়ানরা অনুপ্রেরণা হতে পারে। কেননা তারা স্পেনের মত দলের বিপক্ষে সবক্ষেত্রে পিছিয়ে থেকেও টাইব্রেকারে তাদের হারিয়ে কোয়ার্টারে এসেছে।

Advertisement

বিশ্বকাপের আগে চাপ কাজ করলেও এখন আর তেমন চাপ নেই বলে মনে করেন রাশিয়ান ফুটবলার সামেদভ। তাদের জন্য যে, কোয়ার্টারে আসাটাই অনেক বড় কিছু। ‘বিশ্বকাপের আগের চাপ এবং এখনকার চাপের ভেতর আকাশ-পাতাল পার্থক্য। তখন সময়টা খুব কঠিন ছিল আমাদের জন্য। এখন আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে। তাই সমর্থকদের যতটা সম্ভব উপভোগ্য ম্যাচ উপহার দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’

সামেদুভ, আকিনফেভ, জিউবা, গলোভিন, চেরিশেভের মত তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে রুশ দলটা যেকোন প্রতিপক্ষের জন্যেই বেশ ভয়ের কারণ। নিজনি নভগরদে রেবিচ, মদ্রিচ, রাকিতিচদের মত তারকা ফুটবলারদের তারা কতটা আটকে রাখতে পারবে সেটা ম্যাচেই প্রতিয়মান হবে।

ডেনিশদের দ্বিতীয় রাউন্ডেই বিদায় করে দেওয়া ক্রোয়েশিয়া দলটিকে বলা হচ্ছে ফুটবলে তাদের সেরা প্রজন্ম। সুবাসিচের অমানুষিক গোলকিপিং দক্ষতায় কোয়ার্টারে ওঠে ক্রোয়েশিয়া।

মদ্রিচ এই ম্যাচ নিয়ে বলেন, ‘হ্যা, আমরা ডেনমার্কের মত একই রকম কৌশল কামনা করছি রাশিয়ার কাছ থেকে। স্পেনের বিপক্ষে তারা অনেক গোছালো ফুটবল খেলেছে। তারা কোয়ার্টারে আসার মতই যোগ্য দল।’

Advertisement

রাশিয়ার বিপক্ষে দর্শকরাও যে বিপক্ষে থাকবে সেটা মানেন আগের ম্যাচে ক্রোয়েটদের জয়ের নায়ক সুবাসিচ। ‘স্টেডিয়ামের সব মানুষই আমাদের বিপক্ষে থাকবে। যেটা অন্যভাবে আমাদের খেলতে সাহায্য করবে।’

বিশ্বকাপের এই পর্যায়ে এসে আসলে ভাগ্যের সাথে দরকার মাঠের পারফরম্যান্স। রাশিয়ান রূপকথা কী কোয়ার্টারেই থেমে যাবে? নাকি বিশ্বকে আরো একবার চমকে দিয়ে সেমিতে উঠে যাবে তারা! ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে যখন ক্রোয়েশিয়া তৃতীয় হয় তখন মদ্রিচের বয়স ১৩ এবং রাকিতিচের ১০। তাদের সোনালি প্রজন্মের বীরত্বগাঁথাকে নিশ্চয়ই এত দ্রুত শেষ হতে দিতে চাইবেন না। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত এক ম্যাচের অপেক্ষায় পুরো ফুটবল বিশ্ব।

আরআর/আরআইপি