কোটা সংস্কার প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আতাউল্লাহ।
Advertisement
কোটা আন্দোলনে হামলা-মামলার প্রতিবাদ ও আটককৃতদের মুক্তির দাবিতে শনিবার রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
লিখিত বক্তব্যে আতাউল্লাহ বলেন, গত ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থগারের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ হামলা চালায়। সেখানে সংগঠনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূরসহ আটজন গুরুতর আহত হন। তাদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়। গুরুতর আহতদের সেখানে ভর্তি করতে চাইলে উপরের নির্দেশ আছে কাউকে ভর্তি করা যাবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। পরে আহতদের বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও যুগ্ম আহ্বায়ককে রাত দেড়টার দিকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল থেকে অমানবিকভাবে কর্তৃপক্ষ বের করে দেয়।
তিনি বলেন, গত ১ জুলাই সংগঠনের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খানকে মিরপুর থেকে আটক করে আইসিটি আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজ খানকেও গ্রেফতার করা হয়। এর প্রতিবাদে ২ জুলাই প্রতিবাদ করতে গেলে শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুকসহ ৮-১৯ জনকে মেরে আহত করে। তাদের রক্তে পবিত্র শহীদ মিনারকে রক্তাক্ত করা হয়। সেখানে একজন ছাত্রীকে চরমভাবে নির্যাতনও করা হয়। পরে সেই ছাত্রী সিএনজি নিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা তাকে সিএনজির ভেতরে যৌন নিপীড়ন করে। পরে সেই ছাত্রীকে থানায় নিয়ে নির্যাতন করা হয়। ২৭ ঘণ্টা আটকের পর মুচলেকা দিলে তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, কোটা আন্দোলনের কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরিকুল ইসলামসহ ১০ শিক্ষার্থীকে রামদা, হাতুড়ি ও রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। আমাদের আন্দোলন নষ্ট করতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফেসবুক গ্রুপটি দুর্বৃত্তরা হ্যাক করেছে।
হামলাকারীদের নির্যাতন ও পুলিশে আটকের ভয়ে আমরা সকলে নিরাপত্তাহীতায় রয়েছি। আটককৃতদের নিঃশর্তে মুক্তি, মামলা থেকে প্রত্যাহার ও নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি নির্যাতন, হামলা ও মামলা থেকে মুক্তি দিতে সকল শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের এই নেতা বলেন, কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। প্রজ্ঞাপন জারির পর আর কেউ আন্দোলনে যুক্ত হবেন না। তবে কোন খাতে কত শতাংশ কোটা থাকবে তা সরকার নির্ধারণ করবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনে কোনো রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা নেই। এটি সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি। দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা নিজের অর্থ ও সময় দিয়ে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন।
Advertisement
এ সময় কোটা সংস্কার সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খানের পরিবারসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএম/বিএ/জেআইএম