আন্তর্জাতিক

পর্ন সাইট বন্ধে পিছু হঠলো ভারত

শেষ পর্যন্ত সমালোচনার মুখে পিছু হঠলো ভারত সরকার। প্রায় ৭০০টি পর্ন সাইটের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলো দেশটির টেলিকম মন্ত্রণালয়। তাৎক্ষণিক এক নির্দেশে তা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির একাধিক গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, নতুন এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুধুমাত্র শিশু পর্নগ্রাফি ও ব্লু ফিল্মের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। তবে এর আগে সরকার ৮৫৭টি পর্ন সাইট ব্লক করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দেশজোড়া সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই কটাক্ষের সুরে বলতে থাকেন, বর্তমান সরকারের যাই পছন্দ নয়, তার উপরই নেমে আসছে ব্যানের খাঁড়া!জানা যায়, ভারতের ২০০০ সালের তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৭৯(৩) (বি) ধারা ও সংবিধানের ১৯(২) পরিচ্ছেদ অনুযায়ী, এক নির্দেশিকা জারির মাধ্যমে ৮৫৭টি পর্ন সাইটে ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয় দেশটির কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। নির্দেশ অনুযায়ী বন্ধ করে দেওয়া হয় ৮৫৭টি পর্ন সাইট। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে।একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি কি দেখবেন, কি দেখবেন না বা কি করবেন, কি করবেন না, তার উপর খবরদারি করার সরকার কে? তবে কি এবার নাগরিকের বেডরুমেও উঁকি দেবে রাষ্ট্র? যদি, সে উদ্দেশ্য নাই থাকে, তবে এমন সিদ্ধান্ত কেন? এ রকম নান প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিতর্কের ঝড় ওঠে বিষয়টি নিয়ে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে শেষ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলো দেশটি।এদিকে সপ্তাহখানেক আগে সুপ্রিম কোর্টের মুখ্য বিচারপতি এইচ এল দাত্তু এক রায়ে বলেছিলেন, নিজের বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে বসে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের পর্নগ্রাফি দেখার মৌলিক অধিকার রয়েছে।এরপরেও কেন নিষেধাজ্ঞা? তবে সরকারের একাংশ সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করে বলছেন, গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে শিশু পর্নগ্রাফি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিৎ। তার প্রেক্ষিতেই ৮৫৭টি পর্নসাইট ব্লক করা হয়েছে। কিন্তু অনেকেই আবার পাল্টা দাবিও করছেন, তারা বলছেন- শিশু পর্নগ্রাফি সাইট অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিৎ, কিন্তু এটাকে সরকার অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করে সব বন্ধ করে দিচ্ছে। এমন সাইটও ব্লক করে দেওয়া হয়েছে যেখানে পর্নগ্রাফি দেখানো হয় না।এদিকে চাপের মুখে সরকারের পক্ষে পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করে কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, আমার সরকার একজন ব্যক্তির স্বাধীনতায় কখনো হস্তক্ষেপ করেননি। একজন ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেটে কি দেখবেন, সে বিষয়ে পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে তার।তবে সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত পর্নসাইট বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো ভারত সরকার।আরএস/এমআরআই

Advertisement