শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার সখিপুর ইউনিয়নের কালাইমাঝি কান্দি গ্রামের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাবাসসুম (১৫) গত ২১ জুন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের চারদিন পর এক তরুণীর মরদেহ তাবাসসুমের মরদেহ ভেবে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এনে শরীয়তপুরের কালাইমাঝি কান্দি গ্রামে দাফন করা হয়।
Advertisement
কিন্তু নিখোঁজ তাবাসসুম গত সোমবার (২ জুলাই) সকালে জীবিত অবস্থায় প্রেমিকের সঙ্গে নিজ গ্রামে ফিরে এসেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তাবাসসুম উপজেলার সখিপুর থানার সখিপুর ইউনিয়নের কালাইমাঝি কান্দি গ্রামের বাদল মাঝির মেয়ে।
পুলিশ জানায়, গত ২১ জুন তাবাসসুম নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবার সখিপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে । তাবাসসুম নিখোঁজের দুইদিন পর ২৩ জুন সাভারের আশুলিয়া পেট্রেল পাম্পের কাছে স্যুটকেসের ভেতর থেকে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। ওইদিন রাতে তাবাসসুমের পরিবার ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারে আশুলিয়ায় পেট্রল পাম্পের কাছ থেকে এক তরুণীর মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে ২৫ জুন ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গিয়ে তাবাসসুমের মরদেহ শনাক্ত করেন তার মামা গোলাম মোস্তফা। ওইদিন রাতে তাবাসসুমের মরদেহ ভেবে ওই তরুণীর মরদেহ বাড়িতে এনে দাফন করে পরিবার। এ ঘটনায় তাবাসসুমের মামা ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের চরসেনসাস ইউনিয়নের সিকদারকান্দি গ্রামের সৈয়দ আলী মৃধার ছেলে আজিজ মৃধাকে (১৮) সন্দেহভাজন উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
Advertisement
স্কুলছাত্রী তাবাসসুম জাগো নিউজকে জানায়, ২০১৬ সালে একই উপজেলার চরসেনসাস ইউনিয়নের বালাকান্দি গ্রামে সে তার নানা সিরাজুল ইসলাম মোল্লার বাড়িতে থেকে তারাবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। ভর্তি হওয়ার পরে চরসেনসাস ইউনিয়নের সিকদার কান্দি গ্রামের সৈয়দ আলী মৃধার ছেলে তারাবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল আজিজ মৃধার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তাবাসসুম আরও জানায়, দুই বছর প্রেম করার পর তাবাসসুম বিয়ের প্রস্তাব দেয় আজিজকে। আজিজ প্রথমে বিয়ে করতে রাজি ছিল না। তখন তাবাসসুম আত্মহত্যা করবে বলে ভয় দেখালে আজিজ বিয়ে করতে রাজি হয়। পরে গত ২১ জুন আজিজ তাবাসসুমকে নিয়ে বান্দরবান পালিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে পরদিন তারা বিয়ে করে। এক সপ্তাহ পর বান্দরবান থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে চলে আসে তারা। কেরানীগঞ্জ থেকে মরদেহ দাফনের ঘটনা জানতে পেরে সোমবার শরীয়তপুর নিজ গ্রামে চলে আসে তাবাসসুম ও আজিজ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শরীয়তপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ভেদরগঞ্জ সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান বলেন, আশুলিয়ায় যে মরদেহ পাওয়া গিয়েছিল মূলত সেটি তাবাসসুমের নয়, অন্য কোনো মেয়ের।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, যে মরদেহটি দাফন করা হয়েছে সেটি তাবাসসুমের নয়। কেউ যদি এসে দাবি করেন তাহলে কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মরদেহটি উত্তোলন করা হবে।
Advertisement
ছগির হোসেন/আরএআর/আরআইপি