সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
Advertisement
সোমবার এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করে হামলাকারীদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। এ ছাড়া কোটা সংস্কার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে গেজেট প্রকাশ এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ প্রশমন করে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যাচ্ছে যে, সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তাদের শারীরিকভাবে আহত ও লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। এটি অত্যন্ত অমানবিক, নিন্দাজনক, বেআইনি ও সংবিধান প্রদত্ত নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।’
‘যৌক্তিক দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদানের পরিবর্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে একটি নিয়মতান্ত্রিক ও অহিংস আন্দোলনকে দমনের অপচেষ্টায় ইন্ধন দিচ্ছে, যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও অসাংবিধানিক। হামলার সঙ্গে জড়িতদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তার দৃশ্যমান নিষ্ক্রিয়তা পরিহার করে নিরপেক্ষতা ও পরিপূর্ণ পেশাদারিত্বের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে তাদের ওপর জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে সক্রিয় হতে হবে’,- বলেন তিনি।
Advertisement
ড. জামান বলেন, ‘কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি নিয়ে দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী তার ঘোষণার মাধ্যমে এর যৌক্তিকতা ও বৈধতা নিশ্চিত করেছেন। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক সংগঠনগুলোও আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে কোটা সংস্কারের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তিসহ গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সরকারের তরফ থেকে কোনো প্রকার সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারের একাংশের আন্তরিকতা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর দ্রুত এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সরকার কর্তৃক যথাযথ পদক্ষেপ গৃহীত হলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রয়োজন হতো না।’
এইচএস/জেডএ/এমএস