অর্থনীতি

খেলাপি ঋণ কমাতে টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব

ঋণের সুদ এক অঙ্কে নামানোর প্রধান বাধা নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) বা খেলাপি ঋণ। এ সমস্যা সমাধানে ব্যাংকিং খাতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।

Advertisement

সোমবার মতিঝিল ফেডারেশন ভবনে ব্যাংকের সুদের হার সম্পর্কিত বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রস্তাব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ একটি সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দীর্ঘদিন এ দুর্বিসহ বোঝা সুদের হার এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ এবং বিনিয়োগবান্ধব করতে এই খেলাপি ঋণ না কমানোর কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে আরো জোরদার করা প্রয়োজন। বিশেষ করে বড় অঙ্কের ঋণগুলো কমিয়ে আনার বিষয়ে কাঠামোবদ্ধ ব্যবস্থা নেয়া একান্ত জরুরি। এ সময় খেলাপি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি। যে টাস্কফোর্স নন-পারফর্মিং লোনজনিত সমস্যার মূল কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধানে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রণয়ন করবে। এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জাতীয় স্বার্থে এ সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ব্যবসায়ী নেতা শফিউল ইসলাম বলেন, ঋণ খেলাপি দুই ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে কেউ ব্যবসায় মন্দার কারণে খেলাপি হয়। তাদের সহযোগিতা করতে হবে। আবার অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে খেলাপি হয়। এই দুষ্টচক্রের কারণে ব্যাংকিং খাতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ চক্রকে আমরা নৈতিকভাবে বয়কট করি। তাদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একটি ‘স্বাধীন ব্যাংক কমিশন’ গঠনের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াধীন। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা অর্থমন্ত্রী অতি দ্রুত একটি স্বাধীন ব্যাংক কমিশন গঠন করবেন।

Advertisement

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের একটি বক্তব্য উল্লেখ করে শফিউল ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাংকে ট্রিলিয়নস মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অপেক্ষায় পড়ে আছে। এ অর্থ বিনিয়োগের জন্য বিশ্ব ব্যাংক বিভিন্ন দেশে সুযোগ খুঁজছে। স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে দর কষাকষির মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক থেকে অর্থায়ন গ্রহনের ব্যবস্থা নেয়া হলে তা দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যবহার করা সম্ভব। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বেসরকারি খাতও এ অর্থ ব্যবহার করার সুযোগ পেলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে এফবিসিসিআই মনে করে।

একক অঙ্কে ঋণের সুদহার ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় যেমন কমায়, তেমনি পার্শ্ববর্তী প্রতিযোগী দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সহায়তা করে।

এসআই/এনএফ/পিআর

Advertisement