সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে হিড়িক লেগেছে। চলতি বছরের মে মাসে সঞ্চয়পত্রে নিট বিনিয়োগ হয়েছে ৭ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা। যা একক মাস হিসেবে সঞ্চয়পত্র থেকে সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ সরকারের নিট ঋণ। জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
Advertisement
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে মোট ১০ হাজার ৯৩০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। এর মধ্যে থেকে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের মূল ও মুনাফা পরিশোধ করে নিট ঋণ দাঁড়ায় ৭ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা। যা দেশের সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন সঞ্চয় অধিদফতরের কর্মকর্তারা। এর আগে একক মাস হিসেবে সঞ্চয়পত্রের নিট ঋণের রেকর্ড ছিল ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে এ খাতের নিট ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৪২০ কোটি টাকা।
অধিদফতরের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) সঞ্চয়পত্র থেকে নিট বিনিয়োগ এসেছে ৪৭ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা। তবে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল ৭৭ হাজার ৫৯২ কোটি টাকার। এর মধ্যে থেকে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের মূল ও মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ২৯ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা।
বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের সুদহার : সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
Advertisement
ব্যাংক আমানতের সুদহারের তুলনায় সঞ্চয়পত্রের স্কিমগুলোর মুনাফার হার বেশি হওয়ায় তা কমানোর দাবি আসে ব্যাংকার, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহল থেকে। এর ধারাবাহিকায় গত ৮ জুন বাজেট প্রস্তাব পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সবসময় একরকম থাকবে এমন না। এটা দুই-তিন বছর পরপরই পর্যালোচনা করা হয়। এবার এটা পর্যালোচনা করতে একটু দেরি হয়ে গেছে। বাজেটের মাসে অথবা পরের মাসে এটি পর্যালোচনা করা হবে।’
সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমানোর আভাসের পাশাপাশি নতুন সংকট এসে উপস্থিত হয়েছে আমানতের সুদহার কমিয়ে আনা। গত ২০ জুন ব্যাংক পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) প্রতিনিধিরা এক বৈঠকে আমানতের সুদের হার কমিয়ে সর্বনিম্ন ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেন। যা ১ জুলাই থেকেই কার্যকর হচ্ছে বলা জানানো হয়। এসব হিসাস-নিকাশ মিলিয়ে বিনিয়োগকারীরা এখন সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এসআই/এসএইচএস/পিআর
Advertisement