ছোট ও বড় পর্দার একসময়ের জনপ্রিয় তারকা ইপসিতা শবনম শ্রাবন্তীর সংসার ভাঙার পথে। গত ৭ মে তাকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন তার স্বামী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। জানা গেছে, বগুড়া সদরের কালীতলার শিববাড়ি সড়কে শ্রাবন্তীর বাবার বাসার ঠিকানায় এই নোটিশ পাঠানো হয়।
Advertisement
শ্রাবন্তী দীর্ঘদিন যাবৎ যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। গত ২৫ জুন তিনি দেশে ফিরেছেন। এখন আছেন বগুড়ায়। জানালেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকতেই স্বামীর পাঠানো তালাকের এই নোটিশের খবর পেয়েছেন শ্রাবন্তী। এরপর দ্রুত দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে দেশে এসেছেন। তাদের বড় মেয়ে রাবিয়াহ আলমের বয়স সাত আর ছোট মেয়ে আরিশা আলমের সাড়ে তিন বছর।
এরই মধ্যে গত ২৬ মে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আর যৌতুকের মামলাও করেছেন। শ্রাবন্তী এ বিষয়ে কথা বলেছেন গণমাধ্যমের সামনে। এবার এ বিষয়ে মুখ খুললেন শ্রাবন্তীর স্বামী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।
রোববার দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, ‘ডিভোর্স পেপার পাঠিয়েছি এটি সত্যি। তবে আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করেছে কি-না এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আমাকে কিছু বলেওনি।’
Advertisement
ডিভোর্সের সিদ্ধান্তটি আরও ভালো করে বিবেচনা করে দেখবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখুন, একসঙ্গে থাকার জন্য পারিবারিকভাবে আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। সবরকম চেষ্টা করেই আমরা ব্যর্থ। এরপর ডিভোর্সের এই সিদ্ধান্তেও পারিবারিকভাবেই এসেছে। সুতারাং বিবেচনা করার আর কিছু নেই।’
আপনাদের দুটি সন্তান আছে। ডিভোর্সের পর তাদের সামাজিক অবস্থান হবে মন্দ। তারা বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকাটা মিস করবে। সন্তানদের নিয়ে আপনাদের নিজেদের অবস্থান কেমন হবে? জবাবে মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, ‘তাদের প্রতি বাবা হিসেবে আমার যে দায়িত্ব সেটা পালন করতে আমি সব সময়ই প্রস্তুত। আইনগতভাবে মায়ের অধিকার বেশি থাকে। ওদের মা যদি মনে করেন সন্তানের দায়িত্ব আমাকে দিয়ে দিবেন আমি খুবই উৎসাহের সঙ্গে গ্রহণ করতে প্রস্তুত। এছাড়া তাদের সবরকমভাবে সহযোগিতা করার জন্য আমি সবসময়ই প্রস্তুত আছি।’
শ্রাবন্তীর বিরুদ্ধে স্বামী হিসেবে তার প্রধান অভিযোগ কী? জানতে চাইলে খোরশেদ আলম বলেন, ‘এটাই বলা শোভনীয়, আমাদের ভেতরে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, আস্থার জায়গাটা নষ্ট হয়ে গেছে। যেটা একসঙ্গে থাকলে আরও ধ্বংস হবে। আরও খারাপ দিকে যাবে বলে আমি মনে করছি। সরে আসাই দুজনের জন্য ভালো হবে।’
আপনার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ করেছেন শ্রাবন্তী? মেয়েটি নাকি মালয়েশিয়ায় থাকে? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার মায়ের চিকিৎসার জন্য মালয়েশিয়া গিয়েছিলাম। তখন ওই মেয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল। এর বেশি কিছু না। শ্রাবন্তী এ ব্যাপারে রঙ মাখাচ্ছে। নিজের দোষ আড়াল করতে অন্যকে দোষারোপ করা খুবই সাধারণ একটি বিষয়।’
Advertisement
তবে সব মিলিয়ে শ্রাবন্তী যা বলেছেন এই বিষয়ে তাতে করে মনে হয়েছে সংসারটা বাঁচানোর প্রতি তার আগ্রহ আছে। বিশেষ করে আপনাদের দুটি সন্তানের জন্যও আপনারা এক সঙ্গে থাকতে পারেন, এমনটাই দাবি তার। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন? এর উত্তরে খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমি কোনো বিষয়ে কারও বিরুদ্ধেই নেগেটিভ কথা বলতে চাই না। সে যেই আকুতি প্রকাশ করেছে, এসব জায়গাগুলো আমি এর আগে অনেকবার অতিক্রম করে এসেছি। এই কথাগুলোর ওপরে আমার ভরসা নষ্ট হয়ে গেছে। আমি সাত বছর তো সংসার করেছি। এই ধরনের বিষয় অনেকবার হয়েছে। আস্থাটা নষ্ট হয়ে গেছে আসলে মন থেকেই। শত চেষ্টা করেও আর হবে না। শ্রাবন্তীর সঙ্গে সাত বছরের সংসার করার অভিজ্ঞতা ও সাম্প্রতিক সময়ে তার আচরণ থেকে মনে হয়েছে ডিভোর্স ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ খোলা নেই।’
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর ইপসিতা শবনম শ্রাবন্তী ও মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সংসার জীবন শুরু করেন। এখন ভেঙে যাওয়ার পথে সেই সংসার।
এমএবি/এলএ/পিআর