দেশজুড়ে

নবীনগরে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে গ্রাম ছাড়া কয়েকশ মানুষ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রাম ছাড়া হয়েছেন কয়েকশ মানুষ। উপজেলার বিদ্যাকূট ইউনিয়নের উরখুলিয়া গ্রামটি এখন এক পক্ষের দখলে। নবীনগর থানা পুলিশ একটি পক্ষ নিয়ে অপর পক্ষের লোকজনদের গ্রাম থেকে বিতারিত করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

গ্রামের অনেক ঘরবাড়িতে এখন তালা ঝুলছে। কোনো কোনো ঘরবাড়ি ভাঙচুরের কারণে নিশ্চিহ্ন প্রায়। স্কুলেও ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি কম। উরখুলিয়া গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। এর মধ্যে প্রবাসী রয়েছেন কয়েকশ। মূলত ঝগড়া-বিবাদের পর মামলা চালানোর জন্য চাঁদা ওঠানো হয়। এ চাঁদার বড় অংশ দেন প্রবাসীরা। আর এ টাকার কারণে গ্রামে শান্তি ফেরানোর উদ্যোগ নেই কোনো পক্ষেরই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে উরখুলিয়া গ্রামে আধিপত্য নিয়ে স্থানীয় রাজ্জাক মিয়া ও হামিদুল হকের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জেরে গত ২৭ এপ্রিল উভয় পক্ষের লোকজন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায়। এ ঘটনায় রাজ্জাক মিয়া গ্রুপের কুদ্দুস মিয়া বাদী হয়ে ৬১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘরবাড়িতে হামলা এবং বিস্ফোরণ ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়। এরপর ৫ মে নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলায়েত হোসেন বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে ১০ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলাতেও হামিদুল হকের গ্রুপের লোকজনকে আসামি করা হয়।

অন্যদিকে হামিদুল হক গ্রুপের এনামুল বাদী হয়ে রাজ্জাক মিয়ার গ্রুপের ৬৩ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দেন। তবে পুলিশ ওই মামলা রেকর্ড করতে তালবাহানা করে বলে অভিযোগ করা হয়। কয়েক দফা এজাহার পরিবর্তন করে এবং কিছু কিছু আসামির নাম বাদ দিয়ে মামলাটি সাধারণ ধারায় রেকর্ড করা হয় বলে অভিযোগ করেন হামিদুল গ্রুপের লোকজন।

Advertisement

বিস্ফোরণের কোনো ঘটনা না ঘটলেও তাদের প্রতিপক্ষের মামলা বিস্ফোরক আইনে নেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তারা। হামিদুল হক গ্রুপের লোকজনের বিরুদ্ধে দেয়া মামলায় তিনজন ছাড়া বাকি সবাই জামিনে রয়েছে। তারপরও গ্রামে যেতে পারছেন না তারা। গ্রামে দলবল নিয়ে অবস্থান করছেন রাজ্জাক মিয়ার গ্রুপের লোকজন।

জেলা সদরে আদালত এলাকায় কথা হয় হামিদুল গ্রুপের নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০১৭ সালের জুন মাসে গ্রাম থেকে তাদের একবার বের করে দেয়া হয়। সে কারণে কোরবানি ঈদ করতে হয় গ্রামের বাইরে। প্রায় ৪ মাস পর অক্টোবরে তারা বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর কয়েক দফা পুলিশ দিয়ে তাদের হয়রানি করা হয়। চলতি বছর ২৭ এপ্রিল তাদেরকে গ্রাম থেকে আবার বের করে দেয়া হয় পুলিশের সহায়তাতেই।

তবে নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম সিকদার কারও পক্ষ গ্রাম থেকে লোকজনকে বিতারিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সব মামলা বিস্ফোরক আইনে নেয়া যায় না। পুলিশ শান্তির জন্যই কাজ করে যাচ্ছে।

আজিজুল সঞ্চয়/আরএআর/পিআর

Advertisement