কালিনিনগ্রাদ এরেনায় বেলজিয়াম আর ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি যেন নিজেদের বেঞ্চের শক্তি পরীক্ষার ভালো একটা সুযোগ হিসেবে নিয়েছে দু’দলই। ইংল্যান্ড তো ৯টি পরিবর্তন দিয়ে একাদশ সাজায়। বেলজিয়ামও দলের সেরা সেরা তারকাদের বসিয়ে রেখে একাদশ নির্বাচন করে।
Advertisement
এ কারণে নিয়মরক্ষার এই ম্যাচে দু’দলের খেলা ছিল অনেকটাই শরীর বাঁচানোর। আক্রমণের ধার কম। টানটান উত্তেজনা নেই। যে কারণে ম্যাচের প্রথমার্ধে কেউ কারও জালে বল জড়াতে পারেনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোল করে ইংল্যান্ডকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছে খর্বশক্তির দল বেলজিয়াম। নিজেদের রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি কতটা, সেটা ভালোভাবে দেখিয়েছে বেলজিয়াম।
৫১ মিনিটে বেলজিয়ামের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন আদনান জানুজাই। অসাধারণ একটি শট নিয়েছিলেন তিনি। বক্সের ডান প্রান্ত থেকে তার নেয়া বুলেট গতির এই শট জড়িয়ে যায় বাম কোন দিয়ে। গোলের শট নেয়ার আগে জানুজাই কাটান তিনজন ডিফেন্ডারকে। এরপরই নেন বাম পায়ের জোরালো শট। বল জড়িয়ে যায় ইংল্যান্ডের জালে।
ম্যাচের ৬ষ্ঠ মিনিটেই দারুণ এক আক্রমণ করে বেলজিয়ামের ইউরি তিয়েলমান্স। ন্যাসার চাদলির কাছ থেকে বল পেয়ে ডান পায়ের দারুণ এক শট নেন তিয়েলমান্স। সেটিই অসাধারণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন থিবাত কুর্তোস।
Advertisement
দশম মিনিটে নিশ্চিত গোল বেঁচে যায় ইংল্যান্ড। বক্সের মধ্যে মিকি বাতসুয়াইর জটলার মধ্য থেক ডান পায়ের আলতো শট নেন। গোলরক্ষক পিকফোর্ডকে ফাঁকিয়ে দিয়ে বলটি গড়িয়ে গড়িয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ডের বক্সের মধ্যে। শেষ মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলটি ক্লিয়ার করেন গ্যারি কাহিল।
১২তম মিনিটে যেন প্রথম গোলের সুযোগ তৈরি করে ইংল্যান্ড। মার্কাস রাশফোর্ড ডান পায়ের শট নিলেও বক্সের মধ্যে সেটি ঠেকিয়ে দেন বেলজিয়ামের ডিফেন্ডাররা। ১৪ মিনিটে জ্যামি ভার্ডি ডান পায়ের অসাধারণ একটি হেড নিয়েছিলেন। ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আরনল্ডের ক্রস থেকে আসা বলটিতে হেড করলেও সেটি চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।
২৭ মিনিটে দারুণ একটি বল নিয়ে ইংল্যান্ডের পোস্ট লক্ষ্যে গিয়েছিলেন মিকি বাতসুয়াই। কিন্তু তার ডান পায়ের শটটি ঠেকিয়ে দেন ইংলিশ ডিফেন্ডাররা। পরের মিনিটেই মারুয়ানে ফেল্লাইনির ডান পায়ের শট ঠেকিয়ে দেন ইংলিশ ডিফেন্ডাররা। ৩৪ মিনিটে রুবেন লফটাস চেকের দারুণ এক হেড মিস হয়ে যায়। বল চলে যায় বাইরে। পরের মিনিটেই দারুণ একটি চেষ্টা ছিল আদনান জানুজাইর। কিন্তু সেটিও সফলতার মুখ দেখেনি।
৩৭ মিনিটে থোর্গান হ্যাজার্ড ডান পায়ের শট নিলে সেটি চলে যায় বক্সের বাইরে দিয়ে। তিন মিনিট পর, খেলার ৪০ মিনিটে সেই থোর্গান হ্যাজার্ডই গোল লক্ষ্যে ডান পায়ের দারুণ এক শর্ট চলে যায় বক্সের বাইরে। ৪৩ মিনিটে আদনান জানুজাইর বাম পায়ের শট মিস হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধের খেলা শেষ হলো গোলশূন্য ড্র দিয়ে।
Advertisement
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ইংল্যান্ডের আক্রমণ। ৪৮তম মিনিটেই মার্কাস রাশফোর্ডের ডান পায়ের শট মিস হয়ে যায়। তবে বেলজিয়ামও কম যায় না। দ্বিতীয় সারির দলও বেলজিয়ানদের সেরা, সেটা প্রমাণ করেই ছাড়লো তারা। আদনান জানুজাইর বাম পায়ের অসাধারণ গোল সবাইকে মুগ্ধ করবে।
গোল করার পর বেলজিয়াম যেন আর শক্তিশালী। আক্রমণের পর আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে যেন তারা। বাতসুয়াই, ফেল্লাইনি এবং জানুজাইয়ের সম্মিলিত আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যাস্ত ইংল্যান্ডের রক্ষণ। তবে ৬৬ মিনিটে ইংল্যান্ডের মার্কাস রাশফোর্ড দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিলেন। তার ডান পায়ের শট ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করেন বেলজিয়াম গোলরক্ষক কুর্তোস। এক মিনিট পরই ফ্যাবিয়ান ডেলফের বাম পায়ের শট মিস হয়ে যায়। ৮১ মিনিটে আবারও সুযোগ পেয়ছিলেন মার্কাস রাশফোর্ড। কিন্তু এবারও তার শট কাজে লাগেনি।
শেষ মুহূর্তে দু’দল আরও কয়েকটি আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণ করে; কিন্তু কোনোটাই শেষ পর্যন্ত আর কাজে লাগেনি।
আইএইচএস/বিএ