জাতীয়

রেলের হাল নিয়ে সংসদে ক্ষোভ

দেশের প্রতিটি রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কালোবাজারি, সময় মতো ট্রেন না আসা, ট্রেনের টয়লেট ও ওয়েটিং রুম নোংরা, রেলের জমি দখল হয়ে যাওয়াসহ নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এমপিরা। তারা এসব ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবিত দায়মুক্ত ব্যয় ব্যতীত অন্যান্য ব্যয় সম্পর্কিত মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, সবচেয়ে গণমুখী পরিবহন হলো রেলওয়ে। একটি রেলে এক থেকে দুই হাজার লোক পর্যন্ত যাতায়াত করতে পারেন। কিন্তু মাঝখানে আমরা এই রেল বাদ দিয়ে সড়ক পথে মনোযোগ দিয়েছিলাম। রেলওয়ের মতো নিরাপদ ভ্রমণ আবার আমাদের ফিরিয়ে দেয়ার জন্য মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ থাকবে।

বগুড়া-৬ আসনের এমপি নূরুল ইসলাম ওমর বলেন, আমি লক্ষ্য করেছি ১০টার ট্রেন রাত ১টায় আসে। সেটা এখনও পরিবর্তন হয়নি। প্ল্যাটফর্মের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। অ্যাটেনডেন্স কে কোথায় থাকে তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। এসব কারণে রেলওয়ে যাতায়াত প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা টিকিট পাই না, সিট নাই, কেবিন নাই। আমাদের উত্তরবঙ্গের মানুষের অপরাধটা কী। আমাদের ওই লাইনে পুরাতন ট্রেন চলে। আট-দশ বছর অন্য মন্ত্রীর এলাকা ঢাকা-চট্টগ্রাম চলার পর ট্রেনগুলো আমাদের ওই লাইনে চলে। এই সমস্যাগুলোর সমাধান হচ্ছে না।

Advertisement

পিরোজপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র এমপি রুস্তুম আলী ফরাজী বলেন, আমরা রেল নিয়ে যেটা দেখি-শুনি সেটা হলো- মানুষ টিকিট পায় না, ট্রেনের জানালা নিয়ে ওঠে, ছাদে ওঠে। টিকিট পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে মন্ত্রীর নজর দেয়া উচিৎ। মন্ত্রী যদি প্রকল্পগুলো স্বচ্ছভাবে বাস্তবায়ন করেন তাহলে এই সমস্যার সমাধান হবে।

নারী আসনের রওশন আর মান্নান বলেন, ডিজিটাল যুগে রেলওয়ে সবকিছু নতুন করে করতে হবে। রেলের অনেক সম্পদ লুটপাট হয়ে যায়। এটি বন্ধ করতে হবে। একটি দালাল চক্র সব সময় স্টেশনে হাঁটাচলা করে। এদের শাস্তি দিতে হবে। সিন্ডিকেট থেকে বের করতে পারলে রেল লাভজনক হবে।

কুমিল্লা-৮ আসনের এমপি নূরুল ইসলাম মিলন বলেন, রেলের টয়লেটে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার খুব অভাব। টয়লেট ও স্টেশন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা একান্তভাবে প্রয়োজন। সময় মতো ট্রেন ছাড়ে না। সেদিকে অবশ্যই দৃষ্টি দিতে হবে।

সিলেট-৫ আসনের এমপি সেলিম উদ্দিন বলেন, ট্রেনের টিকেট কিনতে চাইলে টিকিট পাওয়া যায় না। একজনের নামে বরাদ্দ টিকেট অন্যজন নিয়ে যায়।

Advertisement

হবিগঞ্জ-১ আসনের এমপি আবদুল মুনিম চৌধুরী বলেন, ট্রেনের প্রথম শ্রেণিতে ওঠার পর দেখলাম ফ্যান চলে না। চারদিকে দুর্গন্ধ। এটা যদি প্রথম শ্রেণি হয় তাহলে সাধারণ মানুষ যেখানে বসছে সেটার কী অবস্থা!

তিনি বলেন, ট্রেনের ড্রাইভাররা অনেক জায়গায় থামিয়ে তেল বিক্রি করে। এটা বন্ধ করতে হবে।

এসবের জবাবে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, বিএনপি আমলে রেলপথকে একেবারে অবহেলা করে এটা তুলে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। একদিনে ১৩ হাজার কর্মীকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দেয়া হয়েছিল। রেলস্টেশন বন্ধ, রেলপথ বন্ধ করে রেলকে ধ্বংসের পরিকল্পনা করেছিলেন খালেদা জিয়া সরকার।

তিনি বলেন, আশা করি অবিলম্বে রেলের প্রভূত উন্নয়ন ঘটবে। রেল বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের কাতারে চলে যাবে।

এইচএস/এনএফ/পিআর