ধর্ম

পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের নির্ধারিত সময়

নামাজ ইসলামের প্রধান ইবাদত। যথা সময়ে নামাজের আদায়ের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায়কে আবশ্যক করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজকে বিশ্বাসীদের জন্য নির্ধারিত সময়ে আবশ্যক করা হয়েছে।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১০৩)

Advertisement

ফরজ নামাজগুলো আদায় করার ওয়াক্ত বা সময় কখন এ ব্যাপারে হাদিসে রয়েছে সঠিক দিক-নির্দেশনা। প্রিয়নবির অসংখ্য হাদিস থেকে দু’টি হাদিস তুলে ধরা হলো-

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘জিবরিল আলাইহিস সালাম কাবা শরিফের চত্ত্বরে দু’বার আমার নামাজে ইমামতি করেছেন।

প্রথমবার

Advertisement

- তিনি জোহরের নামাজ আদায় করলেন, যখন প্রতিটি বস্তুর ছায়া জুতার ফিতার মতো ছিল। অতঃপর

- আসরের নামাজ আদায় করলেন যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার সমান ছিল। অতঃপর

- মাগরিবের নামাজ আদায় করলেন, যখন সূর্য ডুবে গেল এবং যে সময় রোজাদার ইফতার করে। অতঃপর

- ইশার নামাজ আদায় করলেন, যখন (আকাশের) লাল বর্ণ অদৃশ্য হয়ে গেল। অতঃপর

Advertisement

- ফজরের নামাজ আদায় করলেন, যখন ভোর বিদ্যুতের মত আলোকিত হল এবং যে সময় রোজাদারের ওপর পানাহার হারাম হয়।

তিনি (জিবিরল আলাইহিস সালাম) দ্বিতীয় দিন

- জোহরের নামাজ আদায় করলেন, যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার সমান হলো। এবং পূর্ববর্তী দিন ঠিক যে সময়ে আসর নামাজ আদায় করেছিলেন। অতঃপর

- আসরের নামাজ আদায় করলেন, যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার দ্বিগুণ হল। অতঃপর

- মাগরিবের নামাজ আদায় করলেন, যখন আগের দিনের সময়ে অর্থাৎ যখন সূর্য ডুবে গেল এবং যে সময় রোজাদার ইফতার করে। অতঃপর

- ইশার নামাজ আদায় করলেন, যখন রাতের এক তৃতীয়াংশ চলে গেল। এবং

- ফজরের নামাজ আদায় করলেন, যখন জমিন আলোকিত হয়ে গেল।

অতঃপর জিবরিল আলাইহিস সালাম আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘হে মুহাম্মদ! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটাই হলো আপনার আগে আগমনকারী নবিদের (নামাজের) ওয়াক্ত বা সময়। নামাজের ওয়াক্ত এ দুই সীমার মাঝে সীমাবদ্ধ।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ, মিশকাত) এ হাদিসটি হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুসহ আরো অনেকে বর্ণনা করেছেন।

আরও পড়ুন > নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা উত্তম আমল

অন্য হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নামাজের ওয়াক্তের শুরু এবং শেষ সীমা রয়েছে।

- জোহরের নামাজের শুরুর সময় হচ্ছে, যখন (সূর্য পশ্চিম দিকে) ঢলতে শুরু করে এবং শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে আসরের ওয়াক্ত শুরু হওয়া।

- আসরের প্রথম ওয়াক্ত বা সময় হচ্ছে, যখন আসরের ওয়াক্ত প্রবেশ করে (জোহরের শেষ সময়) এবং তার শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে যখন সূর্যের রং হলুদ রং ধারণ করে।

- মাগরিবের প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে সূর্য ডুবে যাওয়ার পর। এবং তার শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে যখন শাফাক চলে যায়। শাফাক মানে রক্তিম আভা। আর হজরত আবু হানিফা রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে, সাদা আভা।

- ইশার প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে যখন শাফাক বিলীন হয়ে যায়, আর তার শেষ সময় হচ্ছে যখন অর্ধেক রাত চলে যায়।

- ফজরের নামাজের প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে যখন ভোর শুরু হয় এবং তার ওয়াক্ত শেষ হয় যখন সূর্য ওঠা শুরু হয়।’ (তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা প্রিয়নবি ঘোষিত সময়ে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর