সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা বলছে, কর্মক্ষেত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় নারীদের প্রতি বৈষম্যের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে ভারত। পরামর্শদাতা সংস্থা ম্যাকেন্সি লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের এক অনুষ্ঠানে যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সেখানে নারীদের ওপর বৈষম্যের বিভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে।
Advertisement
সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে কর্মক্ষেত্রে নারীদের সুযোগ চীন, জাপান, ফিলিপাইন, মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের থেকেও কম। দেশটিতে ৩০ শতাংশ নারী কর্মরত। বেতন-বৈষম্যেও ভারত প্রথম সারিতে রয়েছে। ৫০ শতাংশ নারী একই কাজে কম বেতন পান। পাকিস্তানে এই হার ৪৮ শতাংশ এবং বাংলাদেশে ৪৬ শতাংশ।
ম্যাকেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী ৭২ শতাংশ ভারতীয় নারী ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা পান। জাপান, কম্বোডিয়া বা থাইল্যান্ডের তুলনায় যা অনেকটাই কম। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীদের এই অবস্থা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাদের মতে, বিভিন্ন সংস্থা সামাজিক দায়বদ্ধতার আইনের বাধ্যবাধকতার জন্য নারীদের নিয়োগ করছে। কিন্তু বেতনে বৈষম্য থাকছে। বাড়তি কাজ করানো হচ্ছে নারীদের দিয়ে, যা তৈরি করছে বৈষম্য।
মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ তুষার বসু বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারীদের গুরুত্ব বাড়লে তবেই বৈষম্য কমবে। নারী আন্দোলন কর্মী শাশ্বতী ঘোষ বলেন, কাজের বাজারে অংশগ্রহণ কম হওয়ায় বেতন নিয়ে নারীরা দরাদরির সুযোগ পাচ্ছেন না। সেই জন্যই বৈষম্য বেড়েই চলেছে।
Advertisement
রিপোর্ট অনুযায়ী, ৭০ শতাংশ ভারতীয় মনে করেন, কর্মরত নারীদের সন্তান অবহেলার শিকার। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, স্কুলের পাঠ্যবই প্রথম শেখায়, বাবা খবরের কাগজ পড়ছেন, অফিসে যাচ্ছেন। কিন্তু মা রান্না করছেন। শিক্ষা ব্যবস্থায় পিতৃতান্ত্রিক মনোভাব কত প্রবল, এটা তারই প্রমাণ। তিনি মনে করেন, সন্তানের জন্মের পর থেকেই বাবা-মায়ের দায়িত্ব সমান গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরার ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে।
টিটিএন/পিআর