আর্জেন্টিনা খেলছিল না, খেলছিলেন যেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ভিআইপি বক্সে বসে রীতিমত হাসফাঁস করছিলেন আর্জেন্টিনার কিংবদন্তী এই ফুটবলার। একটি মুহূর্তের জন্যও শান্ত হয়ে বসতে পারছিলেন না। পারবেন কি করে? এই ম্যাচটি যে ছিল আলবিসেলেস্তেদের বাঁচা মরার ম্যাচ, যেটিতে ড্র হলেও গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় হয়ে যেত দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।
Advertisement
ভিআইপি বক্সে বসে ম্যারাডোনা যা করছিলেন, তাতে মনে ভয় ধরে গিয়েছিল ভক্ত-সমর্থকদের। এই ভয়টা আরও বাড়ে ম্যাচ শেষে যখন আরেকজনের সাহায্য নিয়ে ভিআইপি গ্যালারি ছেড়ে যান। এ সময় স্টেডিয়ামের মধ্যে একটি চেয়ারের ওপর পরেও গিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গেই মেডিকেল কর্মীরা তার রক্তচাপ পরীক্ষা করেন, পাঠানো হয় হাসপাতালে।
৫৭ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তীর শরীরটা এমনিতেও বেশি ভালো যাচ্ছে না। হাসপাতালে যাওয়ায় তাকে নিয়ে ভীষণ উদ্বেগে দিন কাটছে ভক্তদের। তবে স্বস্তির খবর জানিয়েছেন ম্যারাডোনা নিজেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'ইনস্টাগ্রাম'-এ সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন এই বলে-'আমি ভালো আছি।'
তবে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়ার স্নায়ুক্ষয়ী লড়াই দেখার সময় দমই আটকে গিয়েছিল, জানালেন ম্যারাডোনা। তিনি বলেন, 'আমি সবাইকে বলতে চাই, এখন ভালো আছি। তবে ছিলাম না। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে প্রথমার্ধের সময় আমার গলা খুব ব্যথা করছিল। দমও আটকে যাচ্ছিল।'
Advertisement
শরীরটা খুব খারাপ লাগছিল। তবু দলকে এমন ঝুঁকির মধ্যে দেখে মাঠ ছাড়তে মন চায়নি ম্যারাডোনার। ছিয়াশির বিশ্বকাপজয়ের নায়ক সেই সময়টা নিয়ে বলেন, 'ডাক্তার আমাকে পরীক্ষা করে বলেছিলেন, দ্বিতীয়ার্ধের আগেই যেন বাড়ি ফিরে যাই। তবে আমি থাকতে চেয়েছিলাম। কেননা আমরা খুবই ঝুঁকিতে ছিলাম। এমন অবস্থায় কি করে আমি চলে আসি? আমি সবার জন্য একটি চুুমু পাঠালাম, ধন্যবাদ সমর্থন দেয়ার জন্য।'
প্রথমার্ধের ১৪ মিনিটের মাথায়ই মেসির গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ৫৬ মিনিটে পেনাল্টিতে গোল শোধ করে দেয় নাইজেরিয়া। ৮৬ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচটি সমতায়ই ছিল, বাদ পড়ার ঝুঁকিতে ছিল আর্জেন্টিনাও।
এ সময় ভিআইপি বক্সে উম্মাদের মতো আচরণ করতে থাকেন ম্যারাডোনা। একটু পর পর চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াচ্ছিলেন। অশ্রাব্য গালাগাল করছিলেন, একবার তো দলকে ব্যঙ্গ করে হাতের মধ্যম আঙ্গুলও দেখান। শেষ পর্যন্ত মার্কাস রোহোর শটে আর্জেন্টিনার বিজয় নিশ্চিত হওয়ায় কমেছে তার চেঁচামেচি। তবে অসার হয়ে পড়ায় তাকে নিয়ে ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলেন সবাই।
এমএমআর/পিআর
Advertisement