এ যেন কোনো খেলা নয়! দূর থেকে রক্তাক্ত মাচেরানোকে দেখে মনে হচ্ছিল মাঠে যেন যুদ্ধ করছেন তিনি। আহত হয়েছেন, রক্তাক্ত হয়েছেন; তবুও দেশের জন্য হার মানতে নারাজ। হ্যাঁ, আজকের আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচের দৃশ্যই এটি।
Advertisement
বিশ্বকাপে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে সেন্ট পিটার্সবার্গে খেলতে নেমে ম্যাচের শুরুতেই মেসির দুর্দান্ত ডান পায়ের শটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। তবে এই মাচেরানোর ভুলেই নাইজেরিয়ার পক্ষে পেনাল্টি উপহার দেন রেফারি।
যখন নাইজেরিয়ার ভিক্টর মোসেস গোল দিয়ে নাইজেরিয়াকে সমতায় ফেরালো, ক্যামেরায় বারবার ধরা পরছিল মাচেরানোর অশ্রু ভেজা চোখ দুটি। মনে মনে হয়তো ভাবছিলেন, যদি এই ভুলের কারণেই দল বাদ পড়ে যায়, তবে হয়তো নিজেকে আর কখনোই ক্ষমা করতেন পারবেন না তিনি।
তারপর সেই যে মাঝমাঠ থেকে রক্ষণভাগ- সব যেন একাই সামলাচ্ছিলেন একজন সত্যিকারের যোদ্ধার মতো। কী ট্যাকল, কী ইন্টারসেপ- সবই নিখুঁতভাবে করে যাচ্ছিলেন। দলকে গোল থেকে বাঁচাচ্ছেন। আবার গোলের জন্য মেসি-হিগুয়াইন-আগুয়েরোদের বল তৈরি করে দিচ্ছিলেন।
Advertisement
তবে ম্যাচের ৬০ মিনিটের দিকে নাইজেরিয়ার খেলোয়াড়দের আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে মুখ কিছুটা থেঁতলে যায় মাচেরানোর। ডান চোখের ওপর, কপালে বড় একটা অংশ কেটে যায়। গলগলিয়ে রক্ত চোখের পাশ বেয়ে পড়তে থাকে থুতুনি হয়ে।
তবুও নিজের ইনজুরির কারণে এক ফোঁটা সময়ও নষ্ট করলেন না মাচেরানো। কারণ দলের পরের রাউন্ডের টিকিট পেতে যে চাই আরও এক গোল! রক্ত পড়া অবস্থাতেই চালিয়ে গেলেন খেলা। একজন সত্যিকারের যোদ্ধা তো কখনও মাঠে হেরে আসতে পারে না। আসেননি আর্জেন্টিনা দলের অঘোষিত এ দলপতিও। রক্ত মাখা মুখেই নাইজেরিয়ায় পাওয়ার ফুটবলকে মোকাবেলা করে জয় ছিনিয়ে নিয়ে ফিরলেন দ্য ট্যাকেল মাস্টার। আর্জেন্টিনার এই জয়ে সবার পরিশ্রমের ঘামের সঙ্গে মিশে রইলো মাচেরানোর রক্তও।
এসএস/আইএইচএস/
Advertisement