রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ম্যাচ মানেই গ্যালারিতে ম্যারাডোনার উপস্থিতি যেন বাধ্যতামূলক। আর্জেন্টিনার ম্যাচের বিভিন্ন মুহূর্তে ক্যামেরার লেন্স অটোমেটিক যেন ঘুরে যায় ম্যারাডোনার দিকে। আর্জেন্টিনা দলের পুরো অবস্থা দেখা যায় তখন ম্যারাডোনার চেহারায়। নানা ভঙ্গিতে ম্যারাডোনার নানরূপ ফুটে উঠছিল ক্যামেরার পর্দায়।
Advertisement
আইসল্যান্ড এবং ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের দিন দেখা গেছে, ম্যারাডোনা কতটা উদ্বিগ্ন। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে যখন গোলের পর গোল হজম করছিল আর্জেন্টিনা, তখন খুব হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে দিয়েগো ম্যারাডোনাকে। এমনকি ক্রোয়েশিয়ার কাছে গোল হজম করার পর কান্না করতেও দেখা গেছে ১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি তারকার।
ক্রোয়েশিয়ার কাছে পরাজয়ের পর মেসিদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তাদের ড্রেসিং রুমে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার, তাদেরকে পরামর্শ দেয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন ম্যারাডেনা। যদিও সে অনুমতি শেষ পর্যন্ত মেলেনি তার।
তবুও নাইজেরিয়ার বিপক্ষে সেন্ট পিটার্সবার্গে মাঠে যখন নেমেছে লিওনেল মেসিরা, তখন গ্যারারিতে অবশ্যম্ভাবীভাবে উপস্থিত ছিলেন ম্যারাডোনা। শুরু থেকেই মেসিদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সারা বিশ্বের কোটি কোটি আর্জেন্টিনা সমর্থকের মত ম্যারাডোনাও ছিলেন উদ্বিগ্ন। শ্বাসরুদ্ধকর একটা পরিস্থিতি যেন।
Advertisement
লিওনেল মেসিদের বাঁচা-মরার ম্যাচ। মেসির নিজেকে প্রমাণ করারও ম্যাচ। এমন এক ম্যাচে পুরো ঢেলে সাজানো হলো আর্জেন্টিনার একাদশ। বসিয়ে রাখা হলো আগুয়েরো, মেজাকে। নামানো হলো হিগুয়াইন, ডি মারিয়াকে। মেসিকে দেয়া হলো স্বাধীনতা। তারই সুবাধে এভার বানেগার তুলে দেয়া বলকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান পায়ের অসাধারণ শটে নাইজেরিয়ার জাল কাঁপিয়ে দেন লিওনেল মেসি।
এই এক গোলেই যেন বুকে জমে থাকা সব বাতাস বের হলো কোটি কোটি আর্জেন্টিনা সমর্থকের। দীর্ঘশ্বাস বুকের খাঁচা ছেড়ে যেন বেরিয়ে আসলো মুহূর্তের মধ্যে। মাঠে থাকা দিয়েগো ম্যারাডোনাকে এই গোল কতটা ছুঁয়ে গেছে, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার মত নয়। বুক চাপড়ালেন। উল্লাস করলেন। শেষ পর্যন্ত মেসির গোলে আনন্দে কেঁদে দিলেন। চোখের অশ্রুতে ভিজলো তার মুখ। বোঝা গেলো, আর্জেন্টিনার জয়-পরাজয় এখনও কতটা ছুঁয়ে যায় তাকে।
আইএইচএস/বিএ
Advertisement