গ্রুপ প্রতিপক্ষ সুইজারল্যান্ড, কোস্টারিকা ও সার্বিয়া। ব্রাজিল সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল এক ম্যাচ হাতে রেখেই তাদের প্রিয় দল নিশ্চিত করবে দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট; কিন্তু নেইমাররা ভক্তদের সে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। শুরুতেই সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করায় পরের রাউন্ডে উঠতে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।
Advertisement
রোস্তভ এরেনায় প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও পয়েন্ট হারিয়েছে ব্রাজিল। দ্বিতীয় ম্যাচে কোস্টারিকার বিরুদ্ধে ব্রাজিল ২-০ গোলে জিতেছে ইনজুরি সময়ে গিয়ে। তবে এ ম্যাচে ব্রাজিল তাদের ছন্দময় ফুটবলের ঐতিহ্য ধরে রেখেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে।
বুধবার মস্কোর স্পার্টাক স্টেডিয়ামে গ্রুপের শেষ ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ব্রাজিলের পারফরম্যান্স নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। শেষ ম্যাচে ব্রাজিল ভালো খেলে জিতেছে; কিন্তু এই ভালোকে পুরো নম্বর দিতে চাচ্ছেন না অনেকে। তাদের প্রত্যাশা ব্রাজিলের কাছ থেকে আরো ভালো ফুটবল দেখা। যে কারণে, মাঠে তাদের আরো উন্নতি করতে হবে।
এই যেমন ব্রাজিলের সাবেক তারকা ফুটবলার রোমারিও পরিষ্কারই বলেছেন, ‘নেইমাররা জিতেছে, আমি খুশি; কিন্তু এমন খেলায় আমি সন্তুষ্ট নই। আরো আগেই গোল করা উচিত ছিল। ব্রাজিল বেশিরভাগ সময় প্রতিপক্ষের সীমানায় ছিল; কিন্তু গোল বের করতে তাদের কত কষ্টই না করতে হলো! যে দলগুলো পুরোপুরি ডিফেন্স আগলে খেলে তাদের বিরুদ্ধে আগেভাগে গোল বের করতে না পারলে অনেক সময় তার মাশুল গুণতে হয়। ইনজুরি সময়ে দুই গোল আদায় করতে না পারলে ব্রাজিলেরতো সেই দশাই হতো।’
Advertisement
সমস্যা হলো বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই দলে যে ইনজুরি সমস্যা শুরু হয়েছে তা এখনো চলছে। অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার দানি আলভেজের বিশ্বকাপ দল থেকে ছিটকে যাওয়াটা তিতের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ মোটা করেছিল। নতুন করে তার দুশ্চিন্তা ডেকে এনেছে ডগলাস কস্তার ইনজুরি। আগের ম্যাচে কোস্টারিকার বিরুদ্ধে বদলি হিসেবে নেমে তিতের মুখে হাসি ফোটানো কস্তা সার্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না। এমন কী বিশ্বকাপে আর ব্রাজিলের জার্সি গায়ে মাঠে নামতে নাও দেখা যেতে পারে তাকে। ইনজুরিতে রয়েছেন ডিফেন্ডার দানিলোও।
পরের রাউন্ডে যেতে ব্রাজিলের চাই ড্র। জিতলে তো কথাই নেই। সার্বিয়ার মতো দলের বিরুদ্ধে এ সমীকরণটা স্বস্তিদায়কই কী হওয়ার কথা তিতের দলের? কিন্তু ইউরোপের মিডিওকার দলগুলো প্রতিপক্ষকে যেভাবে নাকানি-চুবানি খাইয়েছে, তাতে করে মাঠে ছোট আর দুর্বল বলতে কিছু নেই। তাই তো শেষ ম্যাচে প্রয়োজনীয় পয়েন্ট পেতে বাজিলকে ঘাম ঝরাতে হতে পারে বলেই মনে করছেন ফুটবলবোদ্ধারা।
দ্বিতীয় ম্যাচে কোস্টারিকাকে হারিয়েও কেঁদেছেন নেইমার। ড্রয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পর তার ওপর কতটা চাপ ছিল সেটা বোঝা গেছে জয়ের পর বাচ্চার মতো কাঁদায়। অনেক দিন পর বিশ্বকাপ দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ম্যাচে ফিরেছেন নেইমার। কোচ তিতে বারবারই বলছেন, নেইমারকে সময় দিতে হবে। সেতো মানুষ।
কোস্টারিকার বিরুদ্ধে নেইমারের পরিশ্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। কখনো উপরে, কখনো মাঝে আবার কখনো অনেক নিচে নেমে এসে সতীর্থদের সহায়তা করেছেন। দারুণ এক গোলও করেছেন। গোলের উৎস যিনি ছিলেন, সেই ডগলাস কস্তাকে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে সহযোগী হিসেবে পাচ্ছেন না নেইমার। ডাগআউট থেকে কোচ তিতে যেমন মিস করবেন কস্তাকে, মাঠ থেকে তেমন করবেন নেইমারও।
Advertisement
আরআই/আইএইচএস/আরআইপি