ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সাবেক প্রেসিডেন্ট সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী তামাকের ওপর রফতানি শুল্ক বহাল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া বাজেট বাস্তবায়ন সঠিক সময়ে ও সঠিকভাবে করার জন্য জুলাই-জুন অর্থবছর পাল্টিয়ে এপ্রিল-মার্চ করার দাবি জানান তিনি।
Advertisement
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ দাবি জানান তিনি।
সাবের হোসেন বলেন, এবারের বাজেটে অর্থমন্ত্রী তামাকের রফতানি শুল্ক কমানোর চিন্তা ভাবনা করছেন। তিনি তামাককে এ দেশে আরও ২০ বছর লালন করতে চান। তা হলে দেশে তামাকের চাষ বৃদ্ধি পাবে। যুব সমাজ আরও বেশি তামাকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। কৃষকরাও তামাক চাষে উৎসাহিত হবেন। এর ফলে ২০ বছরে প্রায় সাড়ে ৩২ লাখ মানুষ মারা যাবেন এবং সাড়ে ৭৬ লাখ মানুষ এ কারণে পঙ্গুত্ববরণ করবেন বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক টোবাকো নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক চুক্তিতে আমরা স্বাক্ষর করেছি। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, ২০ বছরের মধ্যে তামাক দেশ থেকে বিতাড়িত করবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাজেটে এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেছেন বিড়ি ২০ বছর এবং সিগারেট আরও ৩০ বছর থাকবে। তাহলে ২০৩৮ সাল পর্যন্ত তামাক এদেশে থাকে তাহলে দেশের লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে।
Advertisement
তিনি আরও জানান, প্রতিবছর তামাকের জন্য বাংলাদেশে ১ লাখ ৬১ হাজার ২০০ জন মারা যান। ২০ বছর যদি এ শিল্পকে লালন-পালন করা হয় তাহলে ২০ বছরে মোট ৩২ লাখ ২৪ হাজার মানুষ শুধু তামাকের জন্য মৃত্যুবরণ করবেন। এছাড়া বছরে ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ এ কারণে পঙ্গুত্ববরণ করে, সে হিসাবে আগামী ২০ বছরে ৭৬ লাখ ৪০ হাজার মানুষ এ কারণে পঙ্গুত্ববরণ করবে।
সাবের হোসেন বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা জেনেভা কনভেনশন, আন্তর্জাতিক টোবাকো নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক ফোরাম, ওয়াল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনসহ অনেকগুলো টোবাকো নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। যেখানে বাংলাদেশ তামাক মুক্ত হাবার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। সেখানে অর্থমন্ত্রী কিভাবে আরও ২০ বছর দেশে তামাকের পৃষ্ঠপোষকতা-লালন পালন করেন তা বোধগম্য নয়। যদি বাজেটে তামাকের ওপর কর বা শুল্ক গত বছরের ২৫ শতাংশের চেয়ে না বাড়ানো হয়, যদি সিগারেটের দাম সামান্য বাড়িয়ে অর্থমন্ত্রী দায় সারেন তাহলে যে ব্যক্তি আগে দামি সিগারেট খেতো সে একটু কম দামি সিগারেট খাবে। তামাক মুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে। যুব সমাজকে বাঁচানো যাবে না। তাই তামাকের ওপর আমাদানি ও রফতানি শুল্ক আরও বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তামাকের রফতানি শুল্ক ২৫ শতাংশ ধরা হয়, এবারে সেটি প্রত্যাহারের কথা বলা হচ্ছে। তাহলে তামাকের ব্যবহার বাড়বে, তামাকের চাষে উদ্বুদ্ধ হবে চাষীরা। এটি আমাদের ভিশনের সঙ্গে যায় না।
এইচএস/জেএইচ/এমএস
Advertisement